স্টাফ রিপোর্টারঃ ২৩ ঘণ্টা শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের পর অবশেষে তিন যুবকের প্রচেষ্টায় উদ্ধার হলো শিশু জিহাদ। শনিবার বিকাল ৩টার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর শাহজাহানপুরের রেলওয়ে মাঠসংলগ্ন পানির পাম্পের ৩শ ফুট গভীর পাইপে পড়ে যাওয়ার পর শিশুটিকে উদ্ধারে চেষ্টা চালায় ফায়ার সার্ভিস। রাতভর ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান ব্যর্থ হয়।
শনিবার দুপুরে ফায়ার সার্ভিস শিশুটি পাইপে নেই বলে ঘোষণা দিয়ে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করার ২ মিনিট পরই উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। উদ্ধারের পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করেন মজিদ, লিটু ও আনোয়ার। তাদের তৈরি একটি ক্যাচারের মাধ্যমে জিহাদকে টেনে তোলা হয়। তাকে প্রায় ২৩৫ ফুট নিচ থেকে যন্ত্রটি দিয়ে টেনে তোলা হয়। ক্যাচারটি লোহার রড ও জাল দিয়ে তৈরি। এ ক্যাচারে কেউ ডুকে পড়লে আর বের হতে পারবে না।
জিহাদ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া যুবক লিটু সাংবাদিকদের বলেন, আমি সাভারের হেমায়েতপুর থেকে এসেছি। এখানে এসে আরো কয়েকজন মেকানিকের সঙ্গে কথা বলে ক্যাচারটি তৈরি করি। রাত ৩টার দিকে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করি। আজ দুপুরে ক্যাচারের মাধ্যমে শিশুটিকে টেনে তুলতে সক্ষম হই।
এর আগে ফায়ার সার্ভিস প্রথমে শিশুটিকে রশি ফেলে উদ্ধারের চেষ্টা করে। তারপর রশিতে কাঠ বেঁধে দেয়া হয়। সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় রশির সঙ্গে পাইপে একটি বস্তা দেয়া হয়। সর্বশেষ ক্রেন দিয়ে পাইপটি টেনে তোলার চেষ্টা করা হলেও সেটি সফল হয়নি। রাত ৩টার দিকে ৩শ' ফুট গভীর পাইপে শিশু জিহাদের অবস্থান জানতে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা পাঠানো হয়।
উদ্ধার কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা বলেন, ক্যামেরা নামানোর পর একেবারে শেষ প্রান্তে তেলাপোকা, টিকিটিকিও দেখা গেছে। কিন্তু শিশুর কোনো শরীর দেখা যায়নি।
শনিবার দুপুর পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত থাকে। দফায় দফায় চলা অভিযানেও শিশুটির খোঁজ না পাওয়ায় উদ্ধার কাজ স্থগিত করে ফায়ার সার্ভিস।
শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার আহাম্মেদ আলী খান বলেন, পাইপের ভেতরে শিশুটির কোনো অস্তিত্ব নেই। তারপরও মানবিক দিকে বিবেচনা করে আমরা অনুসন্ধান কাজ অব্যাহত রাখি। তবে এখন পর্যন্ত বার বার অনুসন্ধানেও শিশুটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ফলে আমরা আপাতত উদ্ধার কাজ স্থগিত করছি।