স্টাফ রিপোর্টারঃ গাজীপুরের জেলা শহরের জয়দেবপুর বাজারের জনতা ব্যাংক, গাজীপুর কর্পোরেট শাখা থেকে ৬০ লখ টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ অচেতন অবস্থায় ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড নূরুল ইসলামকে আটক করেছে। পরে মজিবুর রহমান ও মো. মামুন নামের আরও দুজন নিরাপত্তাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
দুর্ধর্ষ এই চুরির খবর পেয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসক মো. নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, জয়দেবপুর থানার ওসি রেজাউল করিমসহ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে টাকা খোয়া যাবার ঘটনার জের ধরে গতকাল ব্যাংকের ওই শাখায় কোন লেনদেন হয়নি।
নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও জয়দেবপুর থানা থেকে মাত্র কয়েক শ’ গজের মধ্যে অবস্থিত ব্যাংকটি থেকে টাকা খোয়া যাওয়া নিয়ে ব্যাংক ও পুলিশ প্রশাসনে চলছে তোলপাড়। দিনভর লেনদেন না হওয়ায় গ্রাহকদের মাঝেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। জয়দেবপুর থানার এসআই সৈয়দ আবুল হাসেম ও ব্যাংক সূত্র জানায়, নগরের প্রাণ কেন্দ্র জয়দেবপুর বাজারের তানভীর প্লাজার দ্বিতীয় তলায় জনতা ব্যাংকের ওই শাখাটির গেইটের পাশের এক কাপড়ের দোকানদার জাকির গত শনিবার রাত ১০টার দিকে কিছু ফলমূল নিয়ে ব্যাংকে যায় এবং টয়লেটে যাবার কথা বলে দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ড নূরুল ইসলাম (৫০)কে দিয়ে প্রধান ফটক খুলিয়ে ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করে। পরে ফলমূল ও পানির সঙ্গে নেশা জাতীয় দ্রব্য নূরুল ইসলামকে খাইয়ে অচেতন করে এবং ভোল্ট ভেঙ্গে লকার খুলে ৬০ লাখ টাকা নিয়ে ব্যাংকের পেছনের দিকের জানালার গ্রিল খুলে পালিয়ে যায়। সকালে পরের সিফটে ডিউটি করতে আসা সিকিউরিট গার্ড ব্যাংকে গিয়ে ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড নূরুল ইসলামকে অচেতন অবস্থায় এবং ফলমূল, কাপড়-চোপড়সহ এলোমেলো অবস্থায় দেখতে পেয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের খবর দেয়। পরে জয়দেবপুর থাানা পুলিশে খবর দেয়া হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নেশা জাতীয় দ্রব্য মেশানো পানীয় ভর্তি গ্লাস, ডালিম, কমলা, আপেল, হাতুড়ি, কাটারসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে।
পুলিশের ধারণা, মাত্র দুই মাস আগে ওই মার্কেটেই দোকান ভাড়া নেয়া জাকির পরিকল্পিতভাবে কৌশলে একা ব্যাংকের ভেতরে ঢুকলেও টাকা হাতিয়ে নেয়ার মিশনে আরও কয়েকজন জড়িত ছিল। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে এমন সন্দেহে অনেকটা অচেতন অবস্থায় সিকিউরিটি গার্ড নূরুল ইসলামকে আটক করে জয়দেবপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। দুপুরে আরও দুজন নিরাপত্তাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আটক করে জয়দেবপুর থানায় নিয়ে যায়।
জনতা ব্যাংকের ৪জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকা থেকে গাজীপুরের ওই শাখায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে আসেন। তারা জানান, এ ঘটনায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। জয়দেবপুর থানার ওসি রেজাউল করিম জানান, সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়নি। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
গাজীপুরের ওই ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. সোলাইমান জানান, সকালের দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ড ও কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যাংকে ডিউটি করতে ব্যাংকের গেইটে এসে ভেতর থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তালা খোলার মিস্ত্রি এনে তালা খুলে নুরুল ইসলামকে অচেতন অবস্থায় পাওয়ায় যায় এবং পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় ৬০ লাখ টাকা খোয়া গেছে। ওই ব্যাংকে এখনও কোন সিসি ক্যামেরা লাগোনো হয়নি। ব্যাংকে সিসি ক্যামেরা লাগানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলেও তিনি জানান।