ডেস্ক রিপোর্ট/গাজীপুর অনলাইনঃ সরকার পতনে চূড়ান্ত আন্দােলনের অংশ হিসেবে সারা দেশে এখনো অনির্দিষ্টকালের অবরোধ অব্যাহত রয়েছে। গুলশানের নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় বিএনপি চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়া গত ৫ জানুয়ারি থেকে এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। অবরোধের পাশাপাশি হরতাল কর্মসূচিও পালন করছে দলটি। তবে গত ২৫ দিনের কর্মসূচিতে বিএনপি কতটা সফল বা ব্যর্থ হয়েছে এ নিয়ে নিজ দলেই প্রশ্ন উঠেছে।
স্বয়ং দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কড়া নির্দেশের পরও রাজধানীতে এখনো দাঁড়াতে পারেনি দলটির নেতাকর্মীরা। এজন্য আন্দোলনের শুরু থেকেই সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করে আসছে একটি পক্ষ। আরেকটি পক্ষ রাজধানীতে বিএনপির জনসমর্থন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।
কিন্তু প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকাের জানাজায় লাখো মানুষের ঢল দেখে আন্দােলন যে কোন মূল্যে সফল করতে আবারো নতুন করে চিন্তা করছে দলটির হাই কমান্ড। এ ব্যাপারে ভেতরে ভেতরে নানামুখী কৌশল নিয়ে পরিকল্পনা করছে দলটি। বিএনপির কতিপয় তরুণ নেতা এই নতুন কৌশলের সলাপরামর্শে রয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান ছাড়া দলের ‘রাঘব-বোয়ালরা’ সবাই অন্ধকারে রয়েছেন। আন্দােলন শুরুর পর থেকে দলের সিনিয়র নেতাদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা জবাব না দিয়ে এড়িয়ে গেছেন। তারা বলছেন এ ব্যাপারে ভালো জানেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
এদিকে গত ২৫ দিন ধরে টানা অবরোধের পাশাপাশি হরতাল দিয়ে সরকারকে ঘায়েল করার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় এবার ভিন্নধর্মী কৌশল নিয়ে আবারো মাঠে থাকতে চাইছে দলটি।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমানা কোকোর জানাজায় লাখো মানুষের উপস্থিতির পর বিএনপি এখন নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। বিএনপি এখন শান্তিপূর্ণ গণসমাবেশ বা গণমিছিল নিয়ে সরকারকে চাপে ফেলতে চাইছে। তবে গণসমাবেশ বা গণমিছিল কর্মসূচিতেও সফল না হলে আবার বিকল্প চিন্তা করার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির।
২০ দলীয় জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতারা মনে করছেন, অবরোধের পাশাপাশি হরতাল দেয়া হলেও আন্দোলন কর্মসূচি কিছুটা ঝিঁমিয়ে পড়েছে। তাই আন্দোলনে নতুনত্ব আনতে আগামী সপ্তাহে ঢাকায় গণমিছিল ও গণসমাবেশের মতো কিছু একটা কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।
এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ও বিএনপির সিনিয়র নেতারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন। সূত্র জানায় এসময় উপস্থিত ছিলেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গনি, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, বেগম সারোয়ারি রহমান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান জানান, বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। এছাড়া পরবর্তী কর্মসূচি কী হবে তা চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় ঠিক করবে। তাই আমি এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাই না।
এদিকে চলমান আন্দোলনের সফলতা খুব শিগগির দেখা যাবে দাবি করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান বলেন, আগামী সপ্তাহ থেকে আন্দোলনের নতুন কৌশল প্রয়োগ করা হবে। তবে সেই নতুন কৌশল কী হবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। সে আন্দোলন সফল না হলে পরবর্তীতে আবারও আন্দোলনের কৌশল পরিবর্তন হবে। কিন্তু বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এক্ষেত্রে আন্দোলনের গতিপথটাই শুধু পরিবর্তন করা হবে।