স্টাফ রিপোর্টারঃ সব দলের প্রতি আলোচনার আহবান জানিয়ে জাতীয় পার্টির (এরশাদ) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, আসুন সবাই এক সঙ্গে বসি, কিভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়- সে ব্যাপারে আলোচনা করি।
বিকালে জাতীয় পার্টির ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে বেলা ৩টার দিকে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন এরশাদ।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ বলেন, আমি জেলে থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিলাম। কি পেলাম, কোথাও সুবিচার পাইনি! আমিতো কোনো অন্যায় করিনি। আমার কোনো পুলিশ লাগে না, গানম্যান লাগে না। কারণ আমি জানি, আমি দেশের মানুষের কোনো ক্ষতি করিনি।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন হলো। এ সরকার ক্ষমতায় আসল। আমরা প্রধান বিরোধীদল হিসেবে সংসদে গেলাম। আমি বলেছিলাম, ঘরে থাকলে গুম আর বাইরে থাকলে খুন। এখন তাই হলো। নারায়ণগঞ্জে ৭ জন গুমের পর খুন হলো।
জনগণ জাতীয় পার্টিকে আবারও ক্ষমতায় চায় দাবি করে সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় আসলে দেশে আবার সুশাসন আসবে।
এ সময় এরশাদ কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরে বলেন, আমরা প্রাদেশিক সরকার চাই। প্রাদেশিক সরকার চালু হলে হরতাল বন্ধ হবে। মারামারি কাটাকাটি বন্ধ হবে। নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে। ভোট ডাকাতি বন্ধ করতে হবে। এছাড়া নির্বাচন কমিশন ও বিচারকের স্বাধীনতা দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা শ্রম বাজার চালু করেছিলাম, এখন শ্রম বাজার বন্ধ, আমরা আবার ক্ষমতায় আসলে শ্রম বাজার চালু করব।
এরশাদ বলেন, আমরা ছিলাম সংবিধান স্বীকৃত বৈধ সরকার। আমি দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা শুরু করেছি। দেশের মানুষ এখন যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার কথা বলতে পারছে তার ভিত আমিই তৈরি করে দিয়েছি। এলজিইডি সৃষ্টি করে সকল কাঁচা রাস্তা পাকা করার ধারাবাহিকতা সৃষ্টি করেছি। এখন দেশে কোন কাঁচা রাস্তা নেই।
উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকার সময় দেশের অনেক উন্নয়ন করেছে। আমরা ক্ষমতায় থাকার সময় দেশের উন্নয়নের জন্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দিয়েছি। আমরা মুক্ত বাংলা অর্থনীতি চালু করেছিলাম। আমরা সৌদি আরব, জাতিসংঘের সৈন্য পাঠিয়েছিলাম।
সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি ক্ষমতা চাইনি, আমার ওপর ক্ষমতা গ্রহণের দায়িত্ব পড়েছিল।
তিনি বলেন, এই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসর্ম্পণ করে। সেদিন এখানে বিজয় কেতন উড়েছিল। তখন মানুষের আশা ছিল অনেক। কিন্তু মানুষের প্রত্যাশ পূরণ হয়নি। আজ আমি এই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৩ বছর পর ঘোষণা করছি, আমরা ক্ষমতায় এসে মানুষের প্রত্যাশা করব।