গাজীপুর অনলাইনঃ অবরোধের কারনে এসএসসি পরীক্ষার নির্ধারিত তারিখ পেছানো হবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলছেন, ‘কোনো অবস্থাতেই পরীক্ষা পেছানো হবে না। নির্ধারিত তারিখেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।’
৬ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে চলছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অনির্দিষ্টকালের অবরোধ।
২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা। এখনো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তাদের নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছেন।
অবরোধের কারনে পরীক্ষা হবে কিনা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সে শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে মন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিলেন, নির্ধারিত তারিখেই পরীক্ষা হবে।
মন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়, এবারও হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পরীক্ষা সঠিক সময়ে সুষ্ঠুভাবে নিতে আরো কঠোর অবস্থান নিচ্ছি।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সূচি অনুসারে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি।
সময়সূচি অনুযায়ী, ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি ও মাদরাসা বোর্ডের দাখিলের তত্ত্বীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রথম দিন অনুষ্ঠিত হবে বাংলা প্রথম পত্র। এসএসসিতে আগামী ১১ মার্চ সঙ্গীতের ব্যবহারিক পরীক্ষা এবং ১২ থেকে ১৬ মার্চের মধ্যে বেসিক ট্রেডসহ এসএসসির সব বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষা রয়েছে।
চূড়ান্ত সময়সূচি অনুযায়ী মাদরাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলের তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১১ মার্চ। ১৫ মার্চ থেকে ১৯ মার্চের মধ্যে সকল ব্যবহারিক পরীক্ষা রয়েছে।
সকালের পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে ১টা এবং বিকালের পরীক্ষা বিকাল ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত নেয়া হবে।
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় শিক্ষার ক্ষতি প্রসঙ্গে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘লাগাতার অবরোধ, হরতাল কোনোটি সফল হয়নি। দেশের কোনো মানুষ তাদের সমর্থন করেনি। বরং মানুষের ভোগান্তি হয়েছে। খুবই দুঃখজনক অনেক শিক্ষক, শিক্ষার্ত্থী আহত-নিহত হয়েছেন। এই অবরোধ দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের কী লাভ হয়েছে?’
বাংলামেইলকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মন্ত্রী আরো বলেন, অবরোধ-হরতালে লাভের পরিবর্তে তাদের বরং ক্ষতিই হয়েছে। বছরের প্রথম দিনে সারা দেশে বই দেয়া হয়, সেদিনও তারা হরতাল দিয়েছে। বছরের শুরুর এই সময়ে শিক্ষার্থীরা নতুন বই নিয়ে, ক্লাস নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা। কিন্তু এই অবরোধে তা হচ্ছে না।’
নাহিদ বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষার সূচি আগেই চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটা জেনেও তারা এই ধরনের হরতাল-অবরোধ নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অবরোধ প্রমাণ করে দিচ্ছে তাদের কর্মসূচি দেশের বিপক্ষে, জনগণের বিপক্ষে। তাদের এই নাশকতায় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। তাদের জন্য দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে খেসারত দিতে হবে। তাদের এই তথাকথিত হরতাল-অবরোধ বন্ধ করাই একমাত্র সমাধান। আমারাও হরতাল-অবরোধ করেছি। দেশের মানুষকে নিয়ে রাস্তায় থেকে অবরোধ করেছি। কিন্তু তাদের নেতাকর্মীরা রাস্তায় না থেকে বোমা মেরে ভয়ভীতি তৈরি করছে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনকে উদ্দেশ করে নাহিদ বলেন, ‘খালেদা জিয়া প্রকাশ্যে বলুক, উনি পরীক্ষা চান না। অন্যথায় হরতাল-অবরোধ বন্ধ করে সহযোগিতা করুক। আপনারা (বিএনপি-জামায়াত) ক্ষমতা দখল করেন, যা কিছু করেন করেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ করবেন না। একবার ছেলেমেয়েদের দিকে তাকান। ন্যায়ের পথে আসুন।’
প্রশ্ন ফাঁস প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘গতবার প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে নানা রকম সমালোচনা হয়েছে। এবার এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস হবে না। কেউ প্রশ্ন ফাঁস করার সাহস দেখাতে পারবে না। পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সরকার আরো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রশ্ন প্রণয়ণকারী, পরীক্ষক ও প্রশ্ন মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান বিজি প্রেসের সবাই মনিটরিংয়ের আওতায় রয়েছেন।