ডেস্ক রিপোর্টঃ বিশ্ব ইজতেমা ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার ইজতেমার নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে বাড়তি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানানো হয়েছে। একদিকে অবরোধ, অপরদিকে অবরোধের নেপথ্যে নাশকতার ঘটনা ঘটানোর তথ্য ইতিমধ্যে গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে পৌঁছানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তারা এ ধরনের নাশকতার তথ্য পেয়েছেন। তবে জামায়াত-শিবির ও জঙ্গিদের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীরা থাকবে বলেও তথ্য রয়েছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে ইজতেমাসহ রাজধানীতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, বরাবরই জামায়াত-শিবির এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ইজতেমা বিরোধী। এবার তারা ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করবে। ইজতেমায় মুসল্লি সেজে তারা নাশকতা করারও প্রস্তুতি নিয়েছে। মুসল্লিরা আখেরি মোনাজাত শেষে রাজধানীতে প্রবেশের সময় মুসল্লী সেজে জামায়াত-শিবির, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ও বিএনপির নেতাকর্মীরা বিমানবন্দরের সামনে কিংবা রাজধানীর যেকোন পয়েন্টে বসে পড়বে। গত বছর ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজতের মতো বসে সরকার বিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। অপরদিকে মুসল্লিরা দলে দলে রাজধানীতে প্রবেশকালে তারা নাশকতার ঘটনা ঘটাবে। এসব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে র্যাব, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অ্যাকশনে গেলে মুসল্লিদের লাশ পড়বে। এ ঘটনা ঘটলে সেন্টিমেন্ট সাধারণ মানুষের পক্ষে চলে যাবে এবং তারা সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিবে। আর এ সুযোগে অবরোধকারীরা বিশ্ববাসীর কাছে সাধারণ মানুষের লাশ পড়ার দৃশ্য দেখানোর সুযোগ পাবে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা আন্দোলন তীব্রতর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে তথ্য গোয়েন্দা সংস্থার কাছে রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, এসব নাশকতার পরিকল্পনার তথ্য তিনি পেয়েছেন। সেইভাবে তিনি পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলেও জানান।
ইজতেমায় যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা
নাশকতার বিষয়টি সামনে রেখে বিশ্ব ইজতেমার নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। ৫০টি পয়েন্টে থাকছে সিসি ক্যামেরা, র্যাব ও পুলিশের ১৫টি ওয়াচ টাওয়ার। গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকছে প্রতিটি খিত্তা। নাশকতা মনিটরিং তথ্য সংগ্রহে মুসল্লিবেশে থাকবে গোয়েন্দা সদস্যরা। সেই তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি থাকছে।
গাজীপুর পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ বলেছেন, ১০ সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য ইজতেমার নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে ৫টি ওয়াচ টাওয়ার, মোবাইল ও গোয়েন্দা ব্যবস্থা থাকছে। নাশকতার তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তার জন্য যা যা দরকার তা করা হয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান।
র্যাবের ২ সহস্রাধিক সদস্য ইজতেমায় মোতায়েন থাকছে। এ ছাড়া গোয়েন্দা কার্যক্রমে থাকছে সহস্রাধিক র্যাব সদস্য। আকাশপথে হেলিকপ্টারযোগে র্যাবের টহল থাকবে। কোন নাশকতা ঘটলে হতাহতদের নেয়ার জন্য স্ট্যান্ডবাই একটি হেলিকপ্টার থাকবে। এছাড়া র্যাবের পক্ষ থেকে ১০টি ওয়াচ টাওয়ার থাকছে।
র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, নাশকতার তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের পক্ষ থেকে ইজতেমার নিরাপত্তায় যা যা দরকার তার সবকিছু করা হয়েছে। টঙ্গী ব্রিজের কাছ থেকে মহাখালী পর্যন্ত মুসল্লিদের র্যাব প্রহরায় শাটল বাসে আনা-নেয়ার জন্য ব্যবস্থা থাকবে বলে দুই শীর্ষ কর্মকর্তা জানান।