ডেস্ক রিপোর্টঃ চলমান হরতাল-অবরোধে শেয়ারবাজারে টানা দরপতনের ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। দেশের উভয় শেয়ার বাজারে অব্যাহত মূল্যসূচক কমে চলছে। বছরের প্রথম কার্য দিবসে ইতিবাচক প্রবণতায় বাজার শুরু হলে সে ধারায় পতন ঘটে গত ৪ জানুয়ারী থেকে।
এমনিতেই গেল বছর বাজারের অবস্থা ভাল না থাকায় বিনিয়োগকারীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করায় নতুন বছরকে ঘিরে আশায় বুক বেঁধেছিল তারা। কিন্ত চলমান অস্থিরতার ফলে আতঙ্কে পড়েছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। তাই বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে বাজার-সংশ্লিষ্ট সবার মনে নানা প্রশ্ন ও সংশয় দেখা দিয়েছে।
ডিএসই ও বাজার সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,বছরের প্রথম দিনে (১ লা জানুয়ারী) দেশের দুই পুঁজিবাজারে শেয়ার সূচক ছিল ৪ হাজার ৯৪২ পয়েন্ট । ওই দিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২২৮ কোটি টাকার শেয়ার। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক ছিল ৯ হাজার ১৬৬ পয়েন্ট। ওই দিন এ বাজারে ২১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
তথ্যমতে, দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) মঙ্গলবার (২০ জানুয়ারি) টানা দরপতনে শেষ হয়েছে। এদিন উভয় বাজারে মূল্যসূচকের সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। এদিন ডিএসইর সূচক (ব্রড ইনডেক্স) ৪ হাজার ৮৫৬ পয়েন্টে অবস্থান করে। লেনদেন হয়েছে মোট ২৪৭ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
অপর বাজার সিএসইর মূল্যসূচক ৮ হাজার ৯৯৬ পয়েন্টে অবস্থান করে। এদিন লেনদেন হয় মোট ২৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
তথ্যমতে, বছরের প্রথম দিন থেকে বর্তমান টানা দরপতন ঘটেছে অধিকাংশ কোম্পানীর। এ সময়ে ডিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক কমেছে ৮৬ পয়েন্ট। অপর বাজার সিএসইর মূল্যসূচক কমেছে ১৭০ পয়েন্ট। এ অবস্থায় অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা আবারো পুঁজি হারিয়ে সর্বশান্ত হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন।
মহসিন হোসেন নামে এক বিনিয়োগকারী জানান, এমনিতে গত বছর বাজারের অবস্থা ভাল না থাকায় প্রচুর পরিমান লোকসান হলেও নতুন বছরকে ঘিরে সে লোকসান পুশিয়ে নিতে আপ্রান চেষ্টা চালায়। কিন্তু বর্তমান বাজার মন্দার ফলে “সে আসায় গুড়ে বালি” হয়ে পড়েছে। অজানা শংকায় কথা ছোট হয়ে আসে এ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর।
সজিব নামে একজন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী জানান, বড় বোনের কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা ধার এনে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি। বিন্তু পর্যায়ক্রমে লোকসান দিতে দিতে বর্তমানে ওই পুঁজি ৭৫ হাজারে এসে ঠেকেছে। কিÑভাবে এ দায় শোধ করবেন তা নিয়ে চিন্তার অন্ত নেই তার।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ক্রমান্বয়ে এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে বাজারের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে পড়বে এবং ধীরে ধীরে মূল্যসুচক আরো কমে যাবে। ফলে বিনিয়োগকারীরা আবার রাস্তায় নেমে আসবে।
একাধিক সিকিউরিটিজ কোম্পানীর প্রতিনিধির সাথে কথা বলে জানা যায়, চলমান অস্থিরতার কবলে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। প্রতিদিনই কমছে মূল্যসূচক। আর বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতিও অনেক কম। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়ে পড়ছে। অবস্থার উন্নতি না হলে বাজারে ইতিবাচক ধারা ফিরে আসবেনা বলেও জানান তারা।