স্টাফ রিপোর্টার : দেশব্যাপী চলমান অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি আগামীকাল রোববার থেকে ৭২ ঘণ্টা হরতালের ডাক দিয়েছে ২০ দলীয় জোট। রোববার সকাল ৬ টা থেকে বুধবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত এ হরতাল পালিত হবে।
শুক্রবার বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে সর্বাত্মক হরতালের এ আহবান করা হয়। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, দেশব্যাপী ক্রসফায়ারের মাধ্যমে অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা, গুলি করে অসংখ্য নেতাকর্মীকে পঙ্গু করা, দেশব্যাপী বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীসহ নিরীহ জনগণকে গণগ্রেফতার, জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র পুন:রুদ্ধার, বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ ও কুক্ষিগতকরণ, সাংবাদিক নির্যাতন ও সংবাদ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ, জনগণের মৌলিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও সকল রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে এ হরতাল।
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের সকল নেতাকর্মী ও গণতন্ত্রকামী সংগ্রামী জনগণকে শান্তিপূর্ণভাবে এই কর্মসূচি পালনের জন্য ২০ দলীয় জোটের নেতা বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে উদ্বাত্ত আহবান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক সংকটকে আইন শৃঙ্খলা সংকট বলে জাতিকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট গণতান্ত্রিক, নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপুর্ণ উপায়ে জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলন বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গদি দখলকারী অবৈধ সরকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়ে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ নামের এই জনপদের মানবতার শত্রু, গণতন্ত্র হত্যাকারী নব্য বাকশালের রূপকার শেখ হাসিনার একক কর্তৃত্বে ও নেতৃত্বে ভয়াবহ দুর্নীতি, দু:শাসন, দলীয়করণ, দমন-পীড়ণ, অত্যাচার-নির্যাতন ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতিতে দেশের আপামর জনসাধারণের আজ নাভিশ্বাস উঠেছে।
ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী সন্ত্রাসী এবং দলীয়করণকৃত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যদের লুটপাটের বিচরণভূমিতে পরিণত হয়েছে দেশটি। এই অবস্থা থেকে দেশের সকল স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী মানুষ মুক্তি পেতে চায়।
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, জনগণ চায় মুক্ত স্বাধীন পরিবেশ, যেখানে থাকবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, স্বাধীনভাবে চলাফেরার ও সমাবেশের অধিকার, আইনের শাসন, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা ও মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা। সেটা অর্জন করা যেতে পারে একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল জনগণতান্ত্রিক সংসদ ও সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এই গণতন্ত্র হত্যাকারী আওয়ামী লীগ। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৯৫-৯৬ সালে এই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন করে, নৈরাজ্য সৃষ্টি করে, রাস্তায় সরকারি কর্মকর্তাদের দিগম্বর করে, রাষ্ট্রীয় এবং জনগণের সহায়-সম্পদ বিনষ্ট করে সহিংস আন্দোলন করেছিল। তাদের আন্দোলনের নামে নৈরাজ্যের কারণে তখন এসএসসি পরীক্ষা প্রায় তিন মাস পেছাতে হয়েছিল, সেই ইতিহাস দেশের জনগণ এখনও ভুলেনি। বর্তমানে নতুন বাকশাল কায়েম করার জন্য শেখ হাসিনাই সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিলেন।