ডেস্ক রিপোর্টঃ ঈদ মানেই নতুন পোশাক, জুতা, অলঙ্কার। আপাদমস্তক প্রতিটি জিনিস চাই আনকোরা। মেঘ, বৃষ্টি আর সড়কের যানজট উপেক্ষা করে ঈদবাজারে যাওয়া চাই। বিভিন্ন বয়সি ক্রেতাদের ভিড়ে শপিংমলগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। প্রতিবারের মতো রাজধানীতে ভারতীয় টিভি সিরিয়ালে জনপ্রিয় চরিত্রের নামে পোশাক বিক্রি হচ্ছে। বলিউড আর ভারতীয় বাংলা সিরিয়ালের অভিনেত্রীদের নামের ট্যাগ ঝোলানো পোশাকের দিকেই নজর ক্রেতাদের।
রাজধানীর নিউমার্কেট, গাউছিয়া এবং নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি বিপণিকেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে, এবারের ঈদের বাজারে ‘কিরণমালা’ নামের পোশাকটি। এছাড়াও সারারা, মৎস্যকুমারী. ফ্লোর টাচ ও রাজকুমারী পোশাকের চাহিদাও চোখে পড়ার মতো। এক বিক্রেতার ভাষ্যমতে, ‘কিরণমালা পোশাকে লং ড্রেসের ওপরে থাকে কটি, নিচে ঘের, এরপর ফলস, পেছনে নকশা আর দুই পাশে দুটি ঝুমকা। এ পোশাকের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। তিন থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত।’ সাধারণত মেয়ে ও শিশুরা এসে কিরণমালা পোশাক চায়। অনেক বিক্রেতাই এ রকম নকশার পোশাক আনতে পারেননি। তাই যেকোনা নকশার পোশাক বের করে তাঁরা বলেন, এটা ‘কিরণমালা’। কোনো পোশাকে পুঁতি বা পাথরের কাজ করা থাকলেই নাম ‘কিরণমালা’। এই নাম না বললে ক্রেতারা নিতে চান না বলে জানালেন ওই দোকানি।
রাজধানীর নিউমার্কেটে বিভিন্ন পোশাকের দোকানে শোভা পাচ্ছে বিচিত্র সব নামের মেয়েদের পোশাক। ‘কিরণমালা’, কোনটিতে ‘ইচ্ছে নদী’, ‘পামেলা’, ‘জলকন্যা’, ‘পাতালপুরি’, ‘ছুঁয়ে দিলে মন’, ‘রাজকুমারী’ বা ‘বউ কথা কও’—এসব নাম নিয়ে ঝুলছে রকমারি পোশাক। গতবারের আলোচিত ‘পাখি’ পোশাকের এবারের বিক্রি কেমন জানতে চাইলে এক বিক্রেতা বলেন, পাখি ব্যাকডেটেড। এবার পাখি চলছে না। তাই নতুন পোশাক ‘পাখি রিটার্নস’।
ভারতীয় এসব পোশাক কেনার পর আমরাই বিক্রির ধরন দেখে নাম দিই। আবার পরিবতর্নও করি।হিন্দি সিরিয়ালের নামে পোশাক না করলে বিক্রি বাড়ে না। এসব জমকালো পোশাকের পাশাপাশি রয়েছে সুতি ও হালকা কাজের নানারকম থ্রি পিস। এর মধ্যে সেমি-লং, লং কামিজ ইত্যাদি বিভিন্ন স্টাইলের পোশাকের পসরা রয়েছে গাউছিয়ার প্রায় সব দোকানে। এই পোশাকগুলোর দাম ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। সুতি থ্রি পিসের দাম ১ হাজার ৫শ’ থেকে আড়াই হাজার টাকা। নিউ মার্কেটের ক্লথ মিউজিয়াম দোকানের বিক্রেতা বলেন, এবার ভারতীয় ক্যাটালগের জর্জেটের পোশাক বেশ জনপ্রিয়।’ এর মধ্যে বিনয়, ফিওনা, কাসিন এইগুলোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এসব পোশাকের দাম পড়বে ২ হাজার ৫শ’ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। এছাড়াও এখানে পাওয়া যাবে কটন, ইন্ডিয়ান বুটিকের পোশাক, দাম ১ হাজার ৮শ’ ৫০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা।
জরি সুতার কাজ করা লন পাওয়া যাবে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় এবং ইন্ডিয়ান বোম্বে কটনের গজ পাওয়া যাচ্ছে প্রতি গজ ৬শ’ টাকায়। ঘের দেওয়া কামিজের দাম ৩ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। ব্লকবাটিক লং থ্রি পিস ২ থেকে ৭ হাজার টাকা। কটনের থ্রি পিস ১ হাজার ৫শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা। রয়েছে বাচ্চাদের লেহেঙ্গা, দাম ২ থেকে ৭ হাজার টাকা। লং ফ্রক ও ডিভাইডারের দাম ২ থেকে ৮ হাজার টাকা বলে জানালেন নিউমার্কেটের এক বিক্রেতা। নিউমার্কেটে ছেলেদের পোশাকের সারি সাজানো রয়েছে ‘মোদি-১’, ‘মোদি-২’ ‘মোদি-৩’, ‘দাবাং-৩’, ‘পাগলু-২’। এমন নামকরণ সম্পর্কে ওই দোকানের মালিক আসলাম হোসেন বলেন, ‘পাইকারি কেনার সময় মোদি, পাগলু নামগুলো ক্যাশ মেমোতে লেখা হয়েছে। আর বাকি নামগুলো আমরাই দিয়েছি।’ গাউছিয়া মার্কেটে মাইশা ও ফারিয়া নামের দুই তরুণী ‘কিরণমালা’ পোশাক কিনতে এসেছেন। তাঁরা তিনটি দোকানে ঘুরে ওই পোশাকটি দেখেন। কেন ‘কিরণমালা’ কিনবেন—জানতে চাইলে সাবিনা বললেন, ‘এবারের ঈদের লেটেস্ট ফ্যাশন কিরণমালা। এছাড়া অন্য বান্ধবীরা কিনছে, এ জন্য কিনতে চাই।’