গাজীপুর অনলাইন: পূর্ব সীমান্ত নাইক্ষ্যংছড়ি বান্দরবন। সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মুসলিম অধিবাসীদেরকে ‘রোহিঙ্গা’ নামে ডাকা যাবে না এমন সরকারী ফরমান জারি করেছে সেদেশের সুচি নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকার। ‘রোহিঙ্গা’ শব্দের পরিবর্তে ‘ইসলামে বিশ্বাসী জনগোষ্ঠী’ হিসেবে পরিচিত হবেন তারা। সংবাদ ছড়িয়ে পড়ায় শান্তির বাতাস লেগেছে এপার উপারে।
দেশটির মুসলিম অধিবাসীদের পরিচয়কে খাটো করা অপমানসূচক ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি সরকারিভাবে নিষিদ্ধ করে। জাতিগত সংঘাতের শিকার মিয়ানমারের এই জনগোষ্ঠীর পক্ষে সরব হয়েছে বিশ্ব, নড়েচড়ে বসেছে জাতি সংঘ। নির্যাতিত মানুষের পাশে থাকতে গিয়ে এই জনগোষ্ঠিকে নিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের। তাদের পুর্নবাসনের লক্ষে সরকারী উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া নাইক্ষ্যংছড়ি বান্দরবন সীমান্ত পথে এশিয়ান হাওয়ে সড়ক নির্মাণ দু’দেশের বাণিজ্য পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আগামী সপ্তাহে জাতি সংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ইয়াংহি লি মিয়ানমার সফর করবেন।
গত ২০ জানুয়ারি সম্ভব্যতা যাচাই ও ভূমি অধিগ্রহণের তদন্ত শেষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শেখ ফরিদ আহমদ স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর থেকে সড়ক নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাফায়াৎ মুহাম্মদ জাহেদুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পয়েন্ট হতে উখিয়ার ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৯ একর ভূমি অধিগ্রহণ ও সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ করে তালিকা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করি ক্ষতিগ্রস্থ উপযুক্ত কাগজপত্র দাখিল করলে ক্ষতিপূরণ পেয়ে যাবেন এবং তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দ্রুত গতিতে সড়ক নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। আগামী এক বছরের মধ্যে উক্ত দুই কিলোমিটার সড়কের কাজ শেষ হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
দেশটিতে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে রাখাইন প্রদেশের মুসলিমরা। নির্বিচারে চলছে হত্যাযজ্ঞ। জাতি সংঘের বিশেষ প্রতিনিধির এ সফর সামনে রেখেই মানবাধিকারের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করে সু চি নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়। সংবাদ ছড়িয়ে পড়ায় উভয় দেশে বসবাসরত সীমান্ত জনপদে বিপুল অবৈধ রোহিঙ্গা নাগরিকদের মধ্যে খুশির আমেজ বিরাজ করছে। অনেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে নিজ দেশে ফেরত যাবার।