
পুলিশের আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক বলেছেন, রোহিঙ্গা শরনার্থীরা যাতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য পথে চেকপোষ্ট বসানো, বাসে তল্লাশী ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে । তিনি শনিবার বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় টোক নয়নপুর এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, শরনার্থী হিসেবে যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে তাদের খাবার দাবার ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করছে সরকার। এজন্য তাদের আইডি কার্ড দেয়া হচ্ছে এবং ডাটাবেজ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা সুযোগ সুবিধা ভোগ করবেন। তবে তারা যেন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য পথে চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে, পরিবহনে তল্লাসির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা জনগনের কাছে আহবান জানিয়েছি, তাদের যেন কেউ বাসা বাড়িতে ভাড়া না দেয়, আশ্রয় না দেয়। তারপরও যদি তাদের কোথাও পাওয়া যায় তবে তাদের পুনরায় উখিয়া শরনার্থী ক্যাম্পে নেয়া হবে।
এসময় পুলিশ মহাপরিদর্শকের সাথে স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদসহ পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গাদের কারণে সামাজিক সমস্যা উদ্ভব হতে পারে আশঙ্কা করে তিনি আরো বলেন, এক সাথে অনেক লোক থাকলে সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাদের যদি কর্মসংস্থান না থাকে, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা না থাকে সেক্ষেত্রে সামাজিক ভারসাম্য বিনষ্ট হতে পারে। তবে তাদের মাধ্যমে যাতে অপরাধ সংঘটিত না হয় সেজন্য তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষনে রাখা হবে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করবে।
এছাড়াও আইজিপি দুর্গা পূজা অনুষ্ঠানের বিষয়ে কথা বলেন। তিনি জানান সারাদেশের পূজা উদযাপন কমিটির তালিকা পুলিশের হাতে রয়েছে। সকলের সহযোগিতায় পূজা অনুষ্ঠানের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
পরে স্থানীয় শরীফ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ডিগ্রী কলেজ মাঠে সুধী সামাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গাজীপুর-৪ আসনের সাংসদ ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি এমপি, আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক , ঢাকা রেঞ্জের উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) শফিকুল ইসলাম, কলেজ অধ্যক্ষ তাজ উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা কামান্ডার বজলুর রশীদ, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রেজাউর রহমান লস্কর মিঠু, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য জসীম উদ্দিন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন শাওন প্রমূখ।
উল্লেখ্য, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার তিন নদীর মোহনায় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উদ্বোন করা হয়েছে। এটি তিনটি জেলারও মিলনস্থল। তদন্ত কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা পাওয়ায় গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ জেলার শীতলক্ষ্যা নদী কেন্দ্রিক সীমান্তবর্তী এলাকার জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। কাপাসিয়ার টোক নয়নবাজারে তদন্ত কেন্দ্রটি উদ্বোধন করা হয়েছে।
কালিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিশনাল এসপি) পংকজ কুমার দত্ত বলেন, এ তদন্ত কেন্দ্রে একজন পরিদর্শক, চারজন উপ পরিদর্শকসহ মোট ৪০ জনের জনবল থাকবে। কেন্দ্রটির যে কোনো প্রকার অভিযোগ, সাধারণ ডায়েরী গ্রহণ করার ক্ষমতা থাকবে। তবে সেগুলো রুজু হবে কাপাসিয়া থানায় এবং তদন্তকাজ সম্পন্ন করবে তদন্ত কেন্দ্রের কর্মকর্তারা।