
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। মোনাজাতে অংশ নিয়ে লাখো মুসুল্লি মহান আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে মুসলিম জাহানের সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও সার্বিক কল্যাণ কামনা করেছেন।
আজ রোববার বেলা ১০টা ২০ মিনিটে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়।
বাংলা ও আরবি ভাষায় ২৫ মিনিটের এ মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম তাবলিগের শুরা সদস্য মাওলানা জুবায়ের।
এ সময় গাজীপুরের আশেপাশের এলাকায় মসজিদ ও বাসা বাড়ি থেকে মুসুল্লিরা এ মোনাজাতে শরীক হন। মোনাজাতে বিগত দিনের ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা, বিশ্ব শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা হয়।
মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মসজিদের হাফেজ মোহাম্মদ জোবায়ের। ২৭ মিনিটের মোনাজাতে যে যেখানে ছিলেন, সেখানে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে দু’হাত তুলে মহান রবের দরবারে বিগত দিনের ভুলের ক্ষমা প্রার্থনা করেন। মুঠোফোন ও স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সুবাদে দেশ-বিদেশের মুসল্লিরাও একসঙ্গে হাত তোলেন মহান আল্লাহ্র দরবারে।
আখেরি মোনাজাতের পূর্বে ইমান ও আমলের উপর বাংলায় হেদায়তি বয়ান করেছেন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল মতিন।
মোনাজাতকে কেন্দ্র করে ভোরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস থেকে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ময়দানে জায়গা না পেয়ে আশেপাশের অলিগলি ও রাস্তায় পাটি, খবরের কাগজ, পলিথিন বিছিয়ে তাতেই অবস্থান নেন অনেকে। ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে অনেক নারীও এসেছিলেন মোনাজাতে অংশ নিতে।
ময়দানে ঢোকার অনুমতি না থাকায় তারা আশপাশের বিভন্ন কারখানা ও আবাসিক ভবনের ছাদে অবস্থান নিয়ে মোনাজাতে হাত তোলেন। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ আশপাশের এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কারখানা, বিপণীবিতান ও অফিস ছিল বন্ধ।
মোনাজাত শেষে টঙ্গী থেকে বাড়ি ফেরার সুবিধার জন্য ১৫টি শাটল বাস এবং ১৯টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে কর্তৃপক্ষ। নৌ, স্থল ও আকাশ পথে ছিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি। পুলিশের সঙ্গে ছিলো বিপুল সংখ্যাক র্যাব ও আনসার-ভিডিপির সদস্য।
গত ১২ জানুয়ারি ভোরে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল এবারের ইজতেমার মূল আনুষ্ঠানিকতা। চার দিন বিরতি দিয়ে গত শুক্রবার শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব, যা রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো।