মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দেওয়ার নামে হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা’ নামক একটি সংগঠন। এমনকি রাজাকারদের কাছ থেকে ২-১০ লাখ টাকা করে নিয়ে তাদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির আহ্বায়ক আবীর আহাদ।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করে।
তাদের অভিযোগ, দেশের উপজেলাগুলোতে গঠিত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি অ-মুক্তিযোদ্ধা—এমনকি রাজাকারদের থেকে ২-১০ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য করেছে।
সংগঠনটির অভিযোগ, মুক্তিযোদ্ধা বানানোর নামে যে বাণিজ্য চলছে, সে বাণিজ্যের ভাগ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডারসহ ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ ও পাতি নেতারা পেয়েছেন।
আবীর আহাদ বলেন, ২০১৭ সালের জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) এক নির্দেশিকায় ভারতীয় ও লাল মুক্তিবার্তার মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে যেকোনও ব্যক্তিকে মুক্তিযোদ্ধা হতে পারবেন-এমন একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের ফর্মুলা নির্দেশিকায় জুড়ে দেয়। ফলে যাচাই-বাছাই কমিটির অধিকাংশ সভাপতি/সদস্যরা ও সুযোগ সন্ধানীরা পুরো যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াকে একটি বাণিজ্যিক হাতিয়ার বানিয়ে ফেলে। টাকার বিনিময়ে রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দেওয়ার নামে হাজার হাজার কোটি টাকার বাণিজ্যের অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা কোনও অবস্থাতেই দেড় লাখের বেশি হবে না। কিন্তু বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজারের বেশি।’
আবীর আহাদ আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও জাতীয় সংবিধানে সেই অবদানের কোনও স্বীকৃতিই নেই। আর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কারণে আমাদের মান-সম্মান ধুলায় লুণ্ঠিত।’
সরকারের কাছে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ ও ‘মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দ দু’টির সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাবি করেছেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির আহ্বায়ক আবীর আহাদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণকারী সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা কোনো অবস্থাতেই দেড় লাখের বেশি হবে না। কিন্তু বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজারের বেশি। এই সংগঠন ৭১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে।