ভূঁইফোড় সংগঠনের পদক বাণিজ্য; টাকা দিলেই মিলছে বাহারী পদক

বাংলাদেশে এখন অনেক বাণিজ্য চলছে, তৎমধ্যে রমরমা চলছে এওয়্যার্ডে, পুরস্কার বা পদক ব্যবসা । দেশে অনেক চাঁদাবাজ ভূঁইফোড় সংগঠনের ছড়াছড়ি। ব্যাঙের ছাতার মতো গজে উঠেছে এসব ভূঁইফোড় সংগঠন। ক্ষমতাসীন দল বা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির নাম ভঙিয়ে ভূঁইফোড় সংগঠনের দৌরাত্ম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ন্যূনতম শতাধিক ভূঁইফোড় সংগঠন এ অপতৎপরতা বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে। এ ধরণের যাদের অবস্থান শুধুমাত্র কাগজে কলমে, তাদের কোন স্থায়ী সংগঠন নেই। এরা শুধুমাত্র প্যাড সর্বস্ব সংগঠন। এসব সংগঠন হচ্ছে ফায়দাবাজির মাধ্যম। অধিকাংশ ভূঁইফোড় সংগঠনের সৃষ্টি হয়েছে ফায়দা লাভের জন্য।

এক শ্রেণীর তথাকথিত সাংবাদিক এবং পেশাজীবী সংগঠনের নামে রাজনৈতিক সুবিধাবাদী গোষ্ঠী তৈরী হয়েছে। এ তথাকথিত সাংবাদিক ও সংগঠন গুলোর কোন নীতি আদর্শ বলতে নেই। সরকার দলের কর্মী ও অনুসারী পরিচয় দিয়ে নানা ধরণের সুবিধা আদায়ের অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে কতেক ব্যক্তি। আসলে তারা কোন প্রকৃত সাংবাদিক নয় এবং আওয়ামীলীগের কোন নেতা বা কর্মীও নয়। তাদের মূল লক্ষ্য হলো চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা। পদক কিংবা সংবর্ধনা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে উঠতি কিছু স্বঘোষিত নেতা ও ব্যবসায়ী হতে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে পদক বাণিজ্যে লিপ্ত রয়েছে এরকম অনেক সংগঠন। এরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, এম,পিকে নিয়ে আসেন। আবার এরা মন্ত্রী, এম,পিদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করে চলে। সরকার দলের কোন মন্ত্রী, এম,পি এসব চাঁদাবাজদের আমন্ত্রন গ্রহণ করে তাদের ধান্ধাবাজির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বা বিশেষ অতিথির আসন অলঙ্কৃত করলে ভূঁইফোড় সংগঠন গুলো এক ধরণের বৈধতা লাভ করে। আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন রয়েছে নয়টি। এর বাইরে অন্য কোন সংগঠনের দলীয় পরিচয় ব্যবহার করার কারো এখতিয়ার নেই। অথচ এসব ভূঁইফোড় সংগঠনগুলো দলের সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবে দাবী করে।

বঙ্গবন্ধু পরিবারের নামে কোন সংগঠন করতে গেলে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের পূর্বানুমোদন বাধ্যতামূলক। মুক্তিযুদ্ধের নামে কোন সংগঠন গড়তে চাইলে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের অনুমতি গ্রহণের আবশ্যকতা রয়েছে। ভূঁইফোড় সংগঠন গুলো এসব কিছুই মানছেনা। এসব সংগঠন বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য নানা ধরণের পদক বা পুরস্কার বিভিন্ন ব্যক্তিকে প্রদান করছে। এসব ভূঁইফোড় সংগঠনের কাজ হলো এওয়্যার্ড বা পদক বাণিজ্য। এসব ভূঁইফোড় সংগঠন বিভিন্ন মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম সংগ্রহ পূর্বক তাদের ঠিকানায় আমন্ত্রণ পত্র প্রেরণ করে। পাশাপাশাশি যাদের সমাজে কোন অবদান নেই, পরিচিতি নেই এমন কিছু অখ্যাত ব্যক্তিদেরকে তাছাড়া এমনকি মাদক, ইয়াবা, অস্ত্র ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীকে টাকার বিনিময়ে এওয়্যার্ড প্রদান করার ব্যবস্থা করে। পদক প্রাপ্ত ব্যক্তি হতে শ্রেণীভেদে প্রতিজন হতে ১০ হাজার, ২০ হাজার ও ৫০ হাজার টাকা করে এওয়্যার্ড এর মূল্য গ্রহণ করে তারা। এসব ভূঁইফোড় সংগঠনের কর্মকর্তাগণ এওয়্যার্ড অনুষ্ঠানে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, এম,পিদের নাম ব্যবহার করে আমন্ত্রণ পত্র তৈরী করে। কিন্তু আমন্ত্রন পত্রে যে মন্ত্রী, এম,পিদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে, আসলে তারা কেউ এসব অনুষ্ঠান সম্পর্কে মোটেই অবগত নয়। এসব ভূঁইফোড় সংগঠনের কর্মকর্তাগণ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, এম,পিদের হরদম বেচাকেনা করছে। অনুষ্ঠান স্থলে দেখা যায় যেসব মন্ত্রী, এম,পিদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে তারা উক্ত অনুষ্ঠানে কেউ উপস্থিত নেই, বরং অনুষ্ঠান স্থলে দেখা যাবে, কিছু তথাকথিত নেতা যাদের সমাজে কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই, তাদেরকে অনুষ্ঠান স্থলে এনে মঞ্চের চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়। আর মাইকে বার বার ঘোষণা আসতে থাকবে, আমন্ত্রিত মন্ত্রী, এম,পি কিছুক্ষণের মধ্যে মঞ্চে আসন গ্রহণ করবেন। আবার কিছুক্ষণ পর মাইকে ঘোষণা করে, আমন্ত্রনিত মন্ত্রী, এম,পি প্রবল ইচ্ছা থাকার পরও তিনি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে গুরুত্বপূর্ণ সভা বা জাতীয় সংসদে ব্যস্ত থাকায় আজকের এই মহতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি বলে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।




এসব ভূঁইফোড় সংগঠনের নাম ব্যবহার করে অনেকে অর্থ বিত্তের মালিক হয়েছেন। এসব ভূঁইফোড় সংগঠন বিভিন্ন অপকর্ম ও অন্যায় করে রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে। এরা দলের নাম ব্যবহার করে দলকে কলঙ্কিত করছে। চাঁদাবাজি একটি ঘৃণিত কাজ। যত মহান কর্মকান্ডের কথা বলে মানুষকে ভূল বুঝিয়ে কিংবা প্রচ্ছন্নভাবে ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে চাঁদা সংগ্রহ করা হোক না কেন, মানুষ চাঁদাবাজিকে কখনোই ভালো দৃষ্টিতে দেখেনা। চাঁদাবাজরা মানুষের শ্রদ্ধা পায়না। যারা অবৈধ সংগঠন গড়ে তুলে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযাযী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, এটাই প্রত্যাশা। পরিতাপের বিষয়, এসব ব্যক্তি বা ভূঁইফোড় সংগঠনের চাঁদাবাজির কারণে শাসক দলের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হলেও এর প্রতিকারের কোন ব্যবস্থা গৃহীত হতে পরিলক্ষিত হয়নি। যারা জেনে শুনে ভূঁইফোড় সংগঠন গুলোর এসব অনৈতিক কর্মকান্ড দল এবং সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারী তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত হন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবী। এসব ভূয়া ভূঁইফোড় সংগঠনের দৌরাত্ম অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।





নাম

অর্থ ও বাণিজ্য,235,আন্তর্জাতিক,731,কাপাসিয়া,342,কালিয়াকৈর,417,কালীগঞ্জ,253,খেলা,644,গাজীপুর,3936,চাকরির খবর,33,জয়দেবপুর,1581,জাতীয়,2957,টঙ্গী,911,তথ্যপ্রযুক্তি,512,ধর্ম,196,পরিবেশ,136,প্রতিবেদন,310,বিজ্ঞান,55,বিনোদন,697,ভিডিও,58,ভিন্ন খবর,142,ভ্রমন,115,মুক্তমত,27,রাজধানী,829,রাজনীতি,1055,লাইফস্টাইল,283,শিক্ষাঙ্গন,398,শীর্ষ খবর,10756,শ্রীপুর,481,সাক্ষাৎকার,12,সারাদেশ,649,স্বাস্থ্য,212,
ltr
item
GazipurOnline.com: ভূঁইফোড় সংগঠনের পদক বাণিজ্য; টাকা দিলেই মিলছে বাহারী পদক
ভূঁইফোড় সংগঠনের পদক বাণিজ্য; টাকা দিলেই মিলছে বাহারী পদক
https://4.bp.blogspot.com/-Y4QyDr4lE0k/WpMkZHdtvbI/AAAAAAAAWrA/YNIvkV-_CM42QLwt17rtd6akBf6BMLXiACLcBGAs/s400/padok.jpg
https://4.bp.blogspot.com/-Y4QyDr4lE0k/WpMkZHdtvbI/AAAAAAAAWrA/YNIvkV-_CM42QLwt17rtd6akBf6BMLXiACLcBGAs/s72-c/padok.jpg
GazipurOnline.com
https://www.gazipuronline.com/2018/02/padokbanizzya.html
https://www.gazipuronline.com/
https://www.gazipuronline.com/
https://www.gazipuronline.com/2018/02/padokbanizzya.html
true
13958681640745950
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Read More Reply Cancel reply Delete By প্রচ্ছদ PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share. STEP 2: Click the link you shared to unlock Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy