
বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ কার্নিভালে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের ওয়্যারহাউস থেকে এ স্যাটেলাইটটি বহনকারী একটি বিশেষ কার্গোবিমান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় পাঠানো হয়।
এটি উৎক্ষেপনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের ৫৭তম স্যাটেলাইট ক্ষমতাধর দেশের তালিকায় নাম লেখাতে চলেছে বাংলাদেশ। ৩ দশমিক ৭ টন ওজনের এ কৃত্রিম উপগ্রহ এপ্রিল মাসের যেকোনো দিন উৎক্ষেপণ করা হতে পারে।
এর আগে বুধবার ফ্রান্সের কানের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস প্ল্যান্ট ত্যাগ করে এটি। একইদিন স্যাটেলাইট বহনকারী কার্গো বিমান ফ্রান্সের নাইস বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। পরে স্থানীয় সময় সকাল ৮ টার দিকে বিমানটি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করে।
২০১৫ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসি ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ নির্মাণের জন্য ফ্রান্সের থ্যালাস অ্যালেনিয়া স্পেসের সাথে চুক্তি সই করে। চুক্তি অনুযায়ী এ প্রকল্পের সিংহভাগ অর্থ পরিশোধও করেছে বিটিআরসি।
বিটিআরসির সূত্র মতে, বাংলাদেশের প্রথম এ কৃত্রিম উপগ্রহে মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। এর মধ্যে ২০টি ট্রান্সপন্ডার বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে। বাকি ২০টি বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করা হবে। এটিকে ১৫ বছর মেয়াদের মিশনে পাঠানো হচ্ছে। ফ্লোরিডার কেপ কার্নিভালে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এটি মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হবে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের ‘ফ্যালকন-৯’ রকেটে করে এটি মহাকাশে পাঠানো হবে।
এই কৃত্রিম উপগ্রহটি টেলিভিশন চ্যানেল, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট ও বেতারসহ ৪০ ধরনের সেবা দেবে। এছাড়া যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ট্যারিস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশব্যাপী নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা বহাল রাখা এবং পরিবেশ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ই-সেবা নিশ্চিত করবে এ স্যাটেলাইট। এছাড়াও স্যাটেলাইটের কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে শুরু হলে আশপাশের কয়েকটি দেশে টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার সেবা দেয়ার জন্য জিয়োসিক্রোনাস স্যাটেলাইট সিস্টেম (৪০ ট্রান্সপন্ডার, ২৬ কেইউ ব্র্যান্ড, ১৪ সি ব্যান্ড)-এর গ্রাউন্ড সিস্টেমসহ সব ধরনের সেবা পাওয়া যাবে।