
আগামী জুন থেকে অনলাইনে যেকোনো দেশীয় ব্যাংকে টাকা পাঠানো যাবে। এর ফলে, গ্রাহকদের বাঁচবে অনেকটা সময়।
গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের সব ব্যাংকে টাকা পাঠানোর চ্যানেল ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি)-র সঙ্গে যুক্ত হতে বলে।
গত বছরের নভেম্বরে ব্যাংক এশিয়া, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক এবং মিডল্যান্ড ব্যাংক এনপিএসবি-র মাধ্যমে টাকা লেনদেনের চুক্তি করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, আরও ২২টি ব্যাংক দ্রুতই এই ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হবে।
যেসব ব্যাংকে এখনো ইন্টারনেট ব্যাংকিং চালু হয়নি, সেসব ব্যাংকে অন্তত গ্রাহকদের টাকা লেনদেনের ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যবস্থা চালু হলে গ্রাহকরা তাঁদের ক্রেডিট কার্ডের বিল, পেনশন স্কিমের মাসিক কিস্তি, ঋণের কিস্তি, ইনস্যুরেন্স প্রিমিয়াম ঘরে বসেই প্রদান করতে পারবেন।
এর মাধ্যমে, দিনে পাঁচবার এবং দুই লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন করতে পারবেন। এক সঙ্গে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লেনদেন করা যাবে।
এসএমএস অ্যালার্ট সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রাহকরা তাঁদের লেনদেনের তথ্য জানতে পারবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, গত জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহার করছেন ১৭ লাখ ৬১ হাজার গ্রাহক। তাঁদের ৯০ ভাগ হচ্ছেন বেসরকারি ব্যাংকের গ্রাহক এবং বাকিরা বিদেশি ব্যাংকের।
এ বছর জানুয়ারিতে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে সাত লাখ ১৮ হাজার ট্রানজেকশনের মাধ্যমে দুই হাজার ১৭৫ কোটি টাকা লেনদেন করা হয়েছে।
আগামী জুনের পর এই হার অনেক বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা।
এদিকে, পূবালী ব্যাংকের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, “এনপিএসবি-র সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যাংকিংকে যুক্ত করার পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমরা এই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাব।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই প্রচেষ্টা ই-কর্মাসকে আরও উৎসাহ দিবে এবং একটি ‘কাগজের নোটবিহীন’ সমাজ তৈরিতে সাহায্য করবে বলেও মনে করেন তিনি।
ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, এই উদ্যোগের ফলে গ্রাহকদের অনেক সুবিধা হবে।
তবে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়িয়ে যাওয়ার জন্যে ব্যাংকগুলোকে সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর আন্তঃ-ব্যাংক ইলেক্ট্রনিক পেমেন্টের জন্যে এনপিএসবি ব্যবস্থা চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এনপিএসবি এখন ‘মাদার সুইচের’ দায়িত্ব পালন করছে। ধীরে ধীরে এটি সব “চাইল্ড সুইচ”-কে যুক্ত করে নিবে। এই “চাইল্ড সুইচ”-এর মধ্যে রয়েছে এটিএম বুথ, ই-কমার্স, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং এবং বিভিন্ন অনলাইন ব্যাংকিং সেবা।