
রাজধানীতে বিএনপির ২৯ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজধানীর বাংলামোটরের একটি ভবনে বৈঠক করার সময় বিএনপির ১৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার বিকেলে পুলিশ তাদের আটক করে। পুলিশ বলছে, গোপন বৈঠকের অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে হাইকোর্ট মাজার এলাকায় খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল থেকে ১২ জনকে আটক করে পুলিশ।
বাংলামোটরে আটক নেতাদের মধ্যে আছেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শামসুল হুদা, সহসভাপতি ইউনুছ মৃধা, যুগ্ম সম্পাদক কে এম জোবায়ের, আলমগীর হোসেন, আ ন ম সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম।
পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার রবিবার সন্ধ্যায় বলেন, গোপন বৈঠকের অভিযোগে ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিএনপি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কর্মসূচির প্রস্তুতি ও গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর প্রচারে কৌশল ঠিক করতে ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতারা বাংলামোটরে একটি ভবনে বৈঠকে বসেন। বৈঠক শুরুর কিছুক্ষণ পরই পুলিশ তাদের আটক করে।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় রবিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কারাবন্দী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে চলমান আন্দোলনকে দমন করার উদ্দেশ্যেই বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর জুলুম চালানো হচ্ছে এবং গ্রেফতার করা হচ্ছে। সারা দেশে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের ধারাবাহিকতায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, এসব নিপীড়ন করে সরকার যেমন জনগণের রোষ থেকে রেহাই পাবে না, তেমনি দেশনেত্রীর মুক্তি আন্দোলনকেও বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। তিনি আটক নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
অপর দিকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্বেচ্ছাসেবক দল। এ সময় মিছিল থেকে ১২ নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে বলে দাবি দলটির। আজ রবিবার হাইকোর্ট মাজার এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
সংগঠনটির দাবি, ওই মিছিল থেকে মিছিল থেকে কেন্দ্রীয় নেতা জেড আই কামাল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বংশাল থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মাহবুব, মহানগর নেতা আবুল কাশেম, ফয়সাল, মোহাম্মদ আলীসহ ১২ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
হাইকোর্ট মাজারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে জাতীয় ঈদগাহের সামনের গেইটে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক দফতর সম্পাদক আখতারুজ্জামান বাচ্চু জানান, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলের নেতৃত্বে একটি মিছিল হাইকোর্টের দক্ষিণ গেট থেকে শুরু করে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত এলে প্রচণ্ড পুলিশি বাধার মুখে পড়ে এবং ১২ জন নেতাকর্মীকে আটক করে।
বিক্ষোভ মিছিলে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছিন আলী, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এস এম জিলানী, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আনু মো. শামীম, সাবেক দফতর সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক গাজী রেজওয়ানুল হক রিয়াজ, মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ মোর্শেদ পাপ্পা সিকদার, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল কাদের ঝিলন, উত্তরের যুগ্ম সম্পাদক আজিজুর রহমান মোছাব্বিরসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।