
কোনো ধরনের সিন্ডিকেট দিয়ে ছাত্রলীগ চলবে না বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ চলবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও শেখ হাসিনার নির্দেশে। দলের জন্য ত্যাগী ও যোগ্যরাই নেতৃত্বে আসবেন। এর বাইরে কোনো ভাবনা-চিন্তা নেই।
আজ রবিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলনে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন আদালতের দন্ড নিয়ে। সেটা নিয়েও বিএনপি রাজনীতি করছে। যেন সরকার খালেদা জিয়ার নামে মামলা দিয়েছে। আমরা তাকে দন্ড দেয়নি, দন্ড থেকে তাকে মুক্তও করতে পারবো না। খালেদা জিয়া কারাগারে থাকলেও জেলকোড আছে। অসুস্থতার জন্য চিকিৎসা আছে।
কাদের বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ হলে জেলকোড অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। তিনি কতটা অসুস্থ তা আমি জানি না। সেটা চিকিৎসকরা বলতে পারবেন। তবে চিকিৎসক তো জাতীয়তাবাদী চিকিৎসকও হতে পারে। সেক্ষেত্রে জাতীয়তবাদী চিকিৎসকরা চিকিৎসা করলে যে সার্টিফিকেট দিবেন সেখানে তো সন্দেহ থাকবেই।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারেক জিয়া মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন। সেই মুচলেকাতে তিনি লিখেছেন যে, তিনি আর রাজনীতি করবেন না। আমাদের কাছে সেই কাগজপত্র আছে। সেই সময় তিনি বিদেশে গেলেন চিকিৎসা নিতে। এখন বলেন রাজনৈতিক আশ্রয়। হাতের তালু দিয়ে তো আর আকাশ ঢাকা যায় না। সত্যকে কখনো চাপা রাখা যায় না।
বিএনপি আলোচনার পরিবেশ নষ্ট করেছেন উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা আপনাদের বারবার আলোচনার কথা বলেছিল। আপনারা তা প্রত্যাখান করেছেন। এখনও দলের নেতারা অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করছেন। আপনারাই তো আলোচনার পরিবেশ নষ্ট করছেন।
ছাত্রলীগ থেকে সদ্য বিদায় নেওয়া নেতাদের উদেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনি এখন নেতা। যখন আপনি বিদায় নেবেন তখন নতুনরা আপনাকে কী হিসেবে চিনবে সেটা নিয়ে একটু ভাবুন। টাকা-পয়সা দিয়ে নেতা বানালে তারা আপনাদের দিকে ফিরেও তাকাবে না। আপনি বিদায় নিলে আপনার পেছনে শুধু আদর্শের কর্মীরাই থাকবে।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে কাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কারও প্রতি ব্যক্তিগত প্রতিশোধ নিতে গিয়ে যাতে দলের প্রতি প্রতিশোধ না হয়ে যায়। দল না থাকলে আমাদের অস্তিত্ব থাকবে না। আগামী নির্বাচনকে উদ্দেশ্যে করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদেরকে কাদের বলেন, তোমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার বিজয়ের জন্য কাজ করতে হবে। দেশের উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনাকে দরকার, সেটা মানুষকে বোঝাতে হবে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের প্রাণ। আগামী দিনে যারা এ প্রাণকেন্দ্রে নেতৃত্বে আসবে তারা এ ক্যাম্পাসকে পুতপবিত্র রাখবে, এটাই প্রত্যাশা।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একে এম এনামুল হক শামীম বলেন, ছাত্রলীগের ইতিহাস ঐতিহ্য বাংলাদেশের সঙ্গে মিশে রয়েছে। সমগ্র বাঙালি জাতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে। আগামী দিনে যারা এখানে নেতৃত্বে আসবে তাদের মাধ্যমেই বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। এতে সভাপতিত্ব করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।