
গাজীপুর সদরের তিন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে পরাজয়ের নেপথ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ও তার ছেলের ভূমিকাকে দায়ী করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) জেলা আওয়ামী লীগের কাছে কাছে জমা দেওয়া এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজীপুর-৩ আসনের এমপি রহমত আলী ও তার ছেলে জামিল হাসান ওরফে দুর্জয়ের নির্বাচনকালীন বক্তব্য এবং ভূমিকার কারণে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের পরাজিত হতে হয়েছে।
গত ২৯ মার্চ সদর উপজেলার মির্জাপুর, পিরুজালী ও ভাওয়াল গড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভাওয়াল গড় ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ৬৫ ভোটে পরাজিত হন। দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে দাঁড়ানো প্রার্থী পান ৮৫৬ ভোট। মির্জাপুর ইউনিয়নে এ দলের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান পরাজিত হন মাত্র ৯ ভোটের ব্যবধানে। আর বিদ্রোহী প্রার্থী পান ২ হাজার ৩৫৬ ভোট।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনে সংসদ সদস্যের ছেলে সমর্থকদের নিয়ে দলীয় প্রার্থীদের বিপক্ষে এবং বিদ্রোহী প্রার্থীদের হয়ে ভোট চেয়েছেন। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ভোট কেন্দ্র কমিটি এবং স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বক্তব্য ও ভিডিও চিত্রে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে পিরুজালী ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পরাজয়ের পেছনে ‘বাছাইয়ের ভুল’কে দায়ী করা হয়েছে। প্রতিবেদন মতে, বর্তমান চেয়ারম্যানকে মনোনয়ন না দিয়ে এমপি রহমত মনোনয়ন দেন যুবলীগ নেতা জালাল উদ্দিনকে, যার বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্র মামলা এবং পুলিশ দিয়ে মানুষকে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও সুপারিশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আনিসুর রহমান জানান, গাজীপুর-৩ আসনের এমপি ও তার ছেলের নির্বাচনকালীন সন্দেহজনক বক্তব্য এবং ভূমিকার কারণে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে।
একই কথা বলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রেজাউল করিমও।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তাকে পাওয়া যায়নি।