
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ আবারও পিছিয়ে ১০ মে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার সকালে বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া উইং) মো. জাকির হোসেন খান এ তথ্য জানান।
এদিকে নতুন তারিখ ঘোষণা হলেও উৎক্ষেপণের ব্যাপারে এখনও শতভাগ নিশ্চিত নয় বিটিআরসি। শুধু উৎক্ষেপণের দিন সকালে এ বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে থাকে বলে যুগান্তরকে জানিয়েছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ।
তবে তিনি বলেন, যেদিন উৎক্ষেপণ হয় সেদিন সকালবেলা বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। তাই ১০ মে যে চূড়ান্ত তা এ মুহূর্তে বলা যাবে না। উৎক্ষেপণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সোমবার সন্ধ্যায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় যাচ্ছেন বলে জানান।
এদিকে উৎক্ষেপণ অনুষ্ঠান স্মরণীয় করে রাখতে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। সংগঠনের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান যুগান্তরকে জানান, বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাংলাদেশিরা উৎপেক্ষণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ফ্লোরিডা যাবেন। এদিন ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে আনন্দ র্যালি ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। উৎক্ষেপণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে উৎক্ষেপণ অনুষ্ঠানে সোমবার বাংলাদেশের ৩০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
এ ব্যাপারে তারানা হালিমের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি যুগান্তরকে জানান, ১০ মে সম্ভাব্য তারিখ।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে ডানা মেললে নিজস্ব স্যাটেলাইটের অধিকারী বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ ঘটবে।
স্পেস এক্সের উৎক্ষেপণ যান বা রকেট ফ্যালকন-৯ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটকে মহাকাশে ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত অরবিট প্লটে স্থাপন করবে। ফ্রান্সের কান টুলুজ ফ্যাসিলিটিতে নির্মিত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ইতিমধ্যে ফ্রান্স থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় কার্গো বিমানে করে উৎক্ষেপণস্থল ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোর ক্যাপ ক্যানাভেরালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা স্যাটেলাইট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থেলেস এলেনিয়া স্পেস বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটি নির্মাণ করেছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডার রয়েছে। এর মধ্যে ২০ দেশে ব্যবহারের জন্য এবং ২০টি ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয় সম্ভব। এ ছাড়া নিজস্ব স্যাটেলাইট থাকায় বৈশ্বিক টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীলতার অবসান হবে। টেলিমেডিসিন, ই-লার্নিং, ই-গবেষণা, ভিডিও কনফারেন্স, প্রতিরক্ষা ও দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় জরুরি যোগাযোগের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট।
বর্তমানে দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট সংস্থা বিদেশি স্যাটেলাইট ব্যবহার করছে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ খাতে ব্যয় করছে বছরে ১৪ মিলিয়ন ডলার। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট যাত্রা শুরু করলে এই বিপুল অর্থ দেশেই থেকে যাবে।