
গাজীপুরের টঙ্গীতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে রিয়াজুল ইসলাম রনি ওরফে ব্যস্ত রনি (২৯) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন- টঙ্গী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. ওমর ফারুক এবং এএসআই মো. আনোয়ার হোসেন। তাদেরকে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়েছে। নিহত রিয়াজুল ইসলাম রনি ওরফে বেস্তি রনি টঙ্গীর এরশাদ নগরের তিন নম্বর ব্লক, ৩ নম্বর রোড বাসিন্দা মৃত আশরাফ আলী ওরফে হাফিজুল ইসলামের পুত্র। তার গ্রামের বাড়ি বরিশালের ভোলায় বলে জানা গেছে।
টঙ্গী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল হোসেন আজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রোববার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে মাদক কেনা-বেচার খবর পেয়ে টঙ্গী মডেল থানা পুলিশ টঙ্গীর নিমতলী মাঠ এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি ছুঁড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ সদস্যরা পাল্টা গুলি ছুড়লে মাদক বিক্রেতারা কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে গুলিবিদ্ধ রিয়াজুল ইসলাম রনি ওরফে ব্যস্ত রনিকে উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
টঙ্গী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল হোসেন আরো জানান, বন্দুকযুদ্ধে নিহত রিয়াজুল ইসলাম রনি ওরফে ব্যস্ত রনির বিরুদ্ধে টঙ্গী থানায় মাদক, হত্যা, চাঁদাবাজী, মারামারি, ছিনতাই সহ মোট ১৪টি মা
মলা রয়েছে। এঘটনায় টঙ্গী মডেল থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে মাদক ও হত্যা সহ দুইটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে, নিহত রিয়াজুল ইসলাম রনি ওরফে ব্যস্ত রনির স্ত্রী মুনমুন জানান, তার স্বামী রিয়াজুল ইসলাম রনি ওরফে ব্যস্ত রনি মাদক ব্যবসায়ী ও ডিবি ও থানা পুলিশের সোর্স হিসেবে দীর্ঘ দিন কাজ করতো। গত শুক্রবার দিন দুপুর ৩টার দিকে এরশাদ নগর এলাকা থেকে গাজীপুর ডিবি পুলিশ অচিন্দ্র বাবু ও এসআই সিদ্দিক তাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে পুলিশী নির্যাতন করে দফায় দফায় তার শাশুড়ি রিনা আক্তার ও পরিবারের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ টাকা ও বিকাশের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা সহ মোট আড়াইল লাখ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নেয় ডিবি পুলিশ। পরে টঙ্গী থানা এসআই সিদ্দিকের কাছে তাকে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ জানায়, মোটা অংকের টাকা না দিয়ে তার স্বামীকে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করা হবে। রোববার ভোর রাত ৪টার দিকে টঙ্গী থানার এসআই সিদ্দিক তার সঙ্গীয় ফোর্সদের সাথে নিয়ে মাদক ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলাম রনি ওরফে ব্যস্ত রনিকে সাথে নিয়ে টঙ্গীর নিমতলী মাঠ এলাকায় অভিযান চালালে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে রিয়াজুল ইসলাম রনি ওরফে ব্যস্ত রনি (২৯) ঘটনাস্থলে নিহত হয়।
রনির স্ত্রী মুনমুন আরো জানান, পুলিশ তার স্বামী রনিকে মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে। তার ৩ বছরের মোজাহিদ নামে এক পুত্র সন্তান রয়েছে। তারা ২ বোন ১ ভাইয়ের মধ্যে রণি ছিল দ্বিতীয়। আইচপাড়া এলাকার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ফয়সাল,ইমরান, আরমান, অনিক, সোলেমান, ইসমাইল গংদের মধ্যে মাদক ব্যবসা নিয়ে বিরোধ ও মাদক ব্যবসায়ীদেরকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার জের হিসেবে এঘটনাটি ঘটেছে বলে দাবী নিহতের পরিবারের। মরদেহ পুলিশ উদ্বার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় টঙ্গী মডেল থানায় মাদক ও হত্যা সহ দুইটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।