
র্যাবের অভিযানে গাজীপুর জেলার টঙ্গী বাজার এলাকা হতে ৪০,১৩৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে।
জানাযায়,র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি আভিযানিক দল সোমবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলার টঙ্গী বাজারে অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১) মোঃ বায়েজিদ হোসেন (৪১), পিতা- মৃত আব্দুস ছালাম, সাং- মৌলভী ধানাইর, থানা- লোহাগড়া, জেলা- নড়াইল, বর্তমানে হোল্ডিং নং-২৪, ০৫ নং এসএম একাডেমি রোড, মধ্য আউচপাড়া (জনৈক আবু তোয়াব নয়ন এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া), থানা-টঙ্গী, জেলা-গাজীপুর ও ২) জাহানারা বেগম (৩৫), স্বামী- মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সাং-সাইবাড়ী, থানা- রাজবাড়ী, জেলা- ফরিদপুর, বর্তমানে গাজীবাড়ী, পুকুরপাড়, থানা- টঙ্গী, জেলা- গাজীপুর’দ্বয়কে ৪০,১৩৫ (চল্লিশ হাজার একশত পয়ত্রিশ) পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ হাতে-নাতে গ্রেফতার করে। এসময় তাদের নিকট হতে বিভিন্ন ব্রান্ডের ৪ টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১,২৮০/- (বারশত আশি) টাকা জব্দ করা হয়। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক বাজার মূল্য ১,২০,৪০,৫০০/- (এক কোটি বিশ লক্ষ চল্লিশ হাজার পাঁচশত) টাকা মাত্র।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ বায়েজিদ হোসেন ২০০১ সালে টঙ্গী সরকারী কলেজ হতে বিএ পাশ করে। ২০০২ সাল হতে ২০১০ সাল পর্যন্তসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী করে কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিক না থাকার কারণে চাকুরী চলে যায়। পরবর্তীতে সে ২০১১ সাল হতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গার্মেন্টস সেক্টরে চাকুরী করে। সে স্বল্প সময়ে অধিক অর্থ আয়ের অসৎ উদ্দেশ্যে ২০১৭ সালে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ে। তার সহযোগী জাহিদ (ধৃত আসামী জাহানারা বেগম এর ভাই), মুছা, রাসেল, জালাল, সুজন ও আজিজা পরস্পর যোগসাজসে কক্সবাজারের টেকনাফ হতে ইয়াবা ট্যাবলেটের চালান সংগ্রহ করে বিভিন্ন মাধ্যমে আসামী বায়েজিদ এর কাছে পাঠায়। ইয়াবা ট্যাবলেটের চালান প্রাপ্তির পর আসামী বায়েজিদ ধৃত অপর আসামী জাহানারা বেগম ও তার সহযোগীদের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ী চক্রের অপর সদস্যদের নিকট পাইকারী মূল্যে বিক্রয় করে বলে জানা যায়। বিকাশ ও বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ইয়াবা ট্যাবলেট ক্রয়ের টাকা পরিশোধ করা হতো বলে ধৃত আসামী স্বীকার করে। উল্লেখ্য যে, ২০১৮ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে আসামী বায়েজিদ এর বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় একটি মামলা হয় এবং উক্ত মামলার প্রেক্ষিতে সে ০১ মাস ০৭ দিন কেরানীগঞ্জ কারাগারে ছিল বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত অপর আসামী জাহানারা বেগম একজন গৃহিনী। তার ভাই জাহিদ এর হাত ধরে সে মূলত মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত হয়। মাদক ব্যবসার অভিযোগে জাহিদ বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে আছে। জাহিদ কারাগারে যাওয়ার পর মাদক ব্যবসায়ী জনৈক সুমনের সহযোগীতায় মাদক চালান এক স্থান হতে অন্যত্র সরবরাহের কাজ করছিল বলে ধৃত আসামী স্বীকার করে। কক্সবাজার হতে ঢাকায় আগত ইয়াবা চালান সংগ্রহ করে ঢাকাস্থ মাদক ব্যবসায়ী চক্রের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে এসব চালান পৌঁছে দিত বলে ধৃত আসামী জানায়। ইতোপূর্বে সে অনেক বার মাদক চালান সরবরাহের কাজ করেছে বলে স্বীকার করে। প্রতিটি চালান হস্তান্তরের পর মোটা অংকে টাকা পেত বলে ধৃত আসামী জাহানারা জানায়। গ্রেফতারের দিন উদ্ধারকৃত ইয়াবা চালানটি সংগ্রহ পূর্বক জনৈক ফয়সালের নিকট হস্তান্তরের কথা ছিল বলে ধৃত আসামী স্বীকার করে।
ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সদস্যদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। উপরোক্ত বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।