এবারের গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন আলহাজ্ব এড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। সৎ এবং উত্তম চরিত্রের অধিকারী হিসেবে এলাকায় তার নামডাকও রয়েছে।
এড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের প্রসঙ্গে গাজীপুরের জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মানুষকে সহযোগিতা করতে পছন্দ করেন তিনি। নিজ উদ্যোগে তিনি মেধাবীদের জন্য গাজীপুরে বৃত্তি প্রচলন করেছেন। এড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত পোশাকশিল্প ও প্যাকেজিং শিল্পের মালিক।
২৯ এপ্রিল রবিবার তিনি নির্বাচনী ইশতেহার প্রদান করেন। তার দেয়া ইশতেহারে গাজীপুর সিটি উন্নয়নের প্রতিটি চিত্র ফুটে ওঠে কাব্যিকভাবে। বাংলানিউজ পোস্টের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো :
শিক্ষা ক্ষেত্রে গাজীপুরবাসীর পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি উঠে আসে এই নির্বাচনী ইশতেহারে। যেখানে বলা হয়, মহানগরের ছেলে-মেয়েদের জন্য আধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে বিশ্বমানের স্কুল, কওমী মাদ্রাসা, কলেজ, মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। ওয়ার্ড ভিত্তিক আধুনিক গণগ্রন্থাগার স্থাপন করা হবে। গরিব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শিক্ষা বৃত্তির ব্যবস্থা করা হবে।
গাজীপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে সিটি করপোরেশনের চার দিকে বিশেষ করে তুরাগ ও চিলাই নদীর পার্শ্ব দিয়ে টঙ্গী, গাছা, কাশিমপুর, কোনাবাড়ী, বাসন, কাউলতিয়া, জয়দেবপুর ও পুবাইলসহ সকল এলাকাকে সংযোগ করে উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব পশ্চিমে প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ করা হবে। গাজীপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত রেল এর ডাবল লেন স্থাপনসহ ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং লাইনের পাশে প্রশস্ত রাস্তা তৈরি করা হবে। সিটি করপোরেশন এলাকায় সিটি বাস চালু এবং ঢাকা পর্যন্ত বিশেষ বাস সার্ভিসেরও ব্যবস্থা করা হবে। যানজট নিরসন কল্পে ওয়ার্ড ভিত্তিক রাস্তা প্রশস্ত এবং প্রয়োজন অনুসারে নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হবে। টঙ্গী থেকে রাজেন্দ্রপুর পর্যন্ত প্রয়োজন অনুযায়ী ইউলুপ নির্মাণ করা হবে। মহানগরের শাখা রাস্তাগুলোতে ফুটপাত নির্মাণ এবং বিশেষ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
জনগণের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, এড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করবেন তিনি। ওয়ার্ডভিত্তিক কমিউনিটি পুলিশের মাধ্যমে নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ইভটিজিং রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গাজীপুরবাসীর স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ওয়ার্ড ভিত্তিক মেডিকেল সেন্টার স্থাপন, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যবীমা চালু করা হবে। মহানগরের বাজারগুলোতে ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করা হবে। সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও নগরের পয়:নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণ করা হবে।
আবাসিক জোনের কথা মাথায় রেখে নগরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত আটটি আবাসিক জোন (টঙ্গী, গাছা, কাশিমপুর, কোনাবাড়ী, বাসন, কাউলতিয়া, জয়দেবপুর ও পুবাইল) স্থাপন করবেন মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। সঙ্গে গার্মেন্টস কর্মীদের জন্য স্বল্প ভাড়ার বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ করবেন তিনি।
এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিবর্তনের ছোঁয়া এনে পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ার লক্ষ্যে ওয়ার্ডভিত্তিক সকল বর্জ্য সংগ্রহ করে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে রিসাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা করবেন তিনি।
গড়ে তুলবেন কমিউনিটি কমপ্লেক্স। করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রতি ওয়ার্ডে মসজিদ, মন্দির ও অন্যান্য উপাসনালয়, কবরস্থান, খেলার মাঠ, পার্কিং এবং কমিউনিটি সেন্টার স্থাপন করা হবে।
গাজীপুরের মানুষের বেকারসমস্যা সমাধানকল্পে মহানগরে কয়েকটি অর্থনৈতিক জোন ও শিল্পপার্ক স্থাপন করার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে পর্যাপ্ত ড্রেনেজের ব্যবস্থা করা হবে। করপোরেশনের সকল প্রকার সেবাসমূহ ডিজিটালাইজেশন এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করা হবে। সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হবে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকারদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ ব্যবস্থা করা হবে। শতভাগ আবাসিক ও শিল্প স্থাপনায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ব্যবস্থা করা হবে। অঞ্চলভিত্তিক আধুনিক ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা হবে। রাস্তার পাশে এবং ফাঁকা জায়গায় বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে সৌন্দর্য্য বর্ধন ও সবুজায়ন করা হবে। নগর এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহে ফ্রি জোন তৈরি করা এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়ন কমিটি গঠন করা হবে।
মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নেতা-কর্মীদের বলেন, আমি আপনাদের ভাই। আসুন গাজীপুরবাসীর উন্নয়নকল্পে হাতে হাত রাখি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করি। একটি সুখি সমৃদ্ধ ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ি।