
অনলাইন ডেস্ক: শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত সময়ে দুই গোলে জিতে টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলো ব্রাজিলকে। তবে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে গ্রুপ ‘ই’র প্রথম ম্যাচের চেয়ে শুক্রবার কোস্টারিকার বিরুদ্ধে অনেকটাই ছন্দময় ছিলেন নেইমাররা। তবে নির্ধারিত ৯০ মিনিট উপর্যুপরি আক্রমণ শানিয়েও গোল বঞ্চিত থাকতে হয় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। অতিরিক্ত সময়ে মিডফিল্ডার ফিলিপ কুটিনহো ও অধিনায়ক নেইমারের দেওয়া গোলে বিশ্বকাপ ফুটবলের ‘ই’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ব্রাজিল ২-০ গোলে কোস্টারিকাকে হারিয়ে পূর্ণ তিন পয়েন্ট ঘরে তুলে নেয়। এর মধ্যে দুই খেলায় চার পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠলো নেইমারের ব্রাজিল। ফলে তাদের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলা অনেকটাই নিশ্চিত। অপরদিকে টানা দ্বিতীয় হারে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিলো কোস্টারিকা।
সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেছিল ব্রাজিল। সার্বিয়ার কাছে এক গোলে হার ছিল কোস্টরিকার। ফলে দুদলের জন্যই ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। ব্রাজিলের ৪-৩-৩ ফরম্যাটের বিপরীতে কোস্টারিকার ফরমেশন ছিল ৩-৪-২-১। মাঠের খেলায় উপর্যুপরি আক্রমণ করেও ল্যাটিন ছন্দময় ধারা বজায় রেখে ব্রাজিলের দল দখলে ছিল ৭২ ভাগ। শেষ পর্যন্ত চাপ ধরে রেখে জয় তুলে নিয়ে সমর্থকদের আনন্দে ভাসায় পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। আগের রাতে আর্জেন্টিনার হারের পর শঙ্কায় ছিল ব্রাজিলের সমর্থকরাও, অবশেষে স্বস্তি ফিরেছে। অপরদিকে কোস্টারিকার খেলোয়াড়রা ব্যস্ত ছিল রক্ষণভাগ নিয়ে। ৯০ মিনিট সফল হলেও শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয়েছে।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে ভালো একটি সুযোগ পেয়েছিলেন ব্রাজিলের মিডফিল্ডার ফিলিপ কুটিনহো। বক্সের সামনে থেকে নেয়া তার শট বারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ১৩ মিনিট গোলের ভালো সুযোগ পেয়ে যায় কোস্টারিকাও। ডান প্রান্ত মিডফিল্ডার চেলসো বর্গেসকে পাস দিয়েছিলেন রক্ষণভাগের খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ানো গাম্বোয়া। কিন্তু বক্সের ভেতর ফাঁকা পোস্ট পেয়ে তা বাইরে মারেন বর্গেস। ২৬ মিনিট গোল পেয়ে গিয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু ব্রাজিলের স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল জেসুসের গোলটি অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়।
৪১ মিনিট কুটিনহোর পাস থেকে বক্সের সামনে থেকে ডান পায়ে শট নিয়েছিলেন ব্রাজিলের রক্ষভাগের খেলোয়াড় মার্সেলো। তবে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে নিশ্চিত গোল থেকে দলকে রক্ষা করেন কোস্টারিকার গোলরক্ষক কাইলর নাভাস। ফলে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্যভাবে। এ অর্ধে ৬৭ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রাখলেও গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে ব্রাজিল।
ম্যাচের প্রথমভাগে বল দখলের ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১০ মিনিটে কোস্টারিকার সীমানায় আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেয় ব্রাজিল। এ সময় ব্রাজিলের ছয়টি নিশ্চিত গোল রুখে দেন কোস্টারিকার গোলরক্ষক নাভাস।
এখানেই থেমে যাননি নাভাস। পরবর্তীতে ব্রাজিলের আক্রমণগুলোর সামনে বড় দেয়াল হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন ওই নাভাস। গেল বিশ্বকাপে টানা তিন ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়া রিয়াল মাদ্রিদের নাভাসের কারণেই গোলের স্বাদ নিতে পারেনি ব্রাজিল। ফলে নিশ্চিত ড্র’র দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ম্যাচটি।
কিন্তু ইনজুরি সময়ের প্রথম মিনিটে জেসুসের জোগান দেওয়া বল থেকে গোল করেন কুটিনহো। এরপর ইনজুরি সময়ের শেষ মিনিটে মিডফিল্ডার ডগলাস কস্তার পাস থেকে বল পেয়ে ব্রাজিলকে দ্বিতীয় গোলের স্বাদ দেন নেইমার। ফলে ম্যাচে ২-০ গোলের ব্যবধানে ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।
বিশ্বকাপে এটি ছিল দুদলের তৃতীয় লড়াই। ১৯৯০ সালে প্রথম দেখায় ব্রাজিল জিতেছিল ১-০ গোলে। এরপর ২০০২ সালে ৫-২ গোলে জয় পায় ব্রাজিল। আগামী ২৭ জুন রাতে মস্কোয় সার্বিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল। একইদিন নিজনি নভগোরোদে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে লড়বে কোস্টারিকা।