গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে নয়টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার বিকালে ভোটগ্রহণ শেষে বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন রিটার্নিং অফিসার রকিবউদ্দিন মণ্ডল।
রিটার্নিং অফিসার বলেন, ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু হয়েছে। ১৪৫ কেন্দ্রের মধ্যে নয়টিতে অনিয়ম হয়েছে। এসব কেন্দ্রে কারচুপি, কেন্দ্র দখলের মতো অভিযোগ থাকায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
স্থগিত হওয়া কেন্দ্রগুলো হলো- ভোগরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র (৯৮), মদিনা তুলাউল সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্র (১৬৬), কুনিয়া হাজি আব্দুল লতিফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র (২৪৪), একই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় কেন্দ্র, বিন্দাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র (২৭৪), জাহান পাবলিক দত্তপাড়া টঙ্গী কেন্দ্র (২৪২) (পুরুষ), খরতুইল মনসুর আলী আদর্শ বিদ্যালয় কেন্দ্র (২৭২), খরতুইল মনসুর আলী আদর্শ বিদ্যালয় কেন্দ্র (২৭৩), হাজি পিআর আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র (২৮১) (বড় দেওরা টঙ্গী)।
এর আগে সকালে ভোট শুরুর পর কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে। বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটাররা দীর্ঘ লাইন ধরে ভোট দিতে অপেক্ষা করেন। আর নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ছয়দানায় নিজ বাসভবন থেকে বের হয়ে কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম। সোয়া ৯টার দিকে তিনি ভোট দেন।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদেন বলেন, ‘ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পেরেছেন। জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমে যে রায় দেবেন, সেই রায় আমি মেনে নিতে প্রস্তুত। জয়কে জয় আর পরাজয়কে পরাজয় মেনে নিতে আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত আছি।’
অন্যদিকে ভোট শুরু পরপরই ১০ কেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন বন্ধের দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘প্রায় ১০০ কেন্দ্র থেকে বিএনপির পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে ভোট বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।’ তবে ইসি নির্বাচন বন্ধ না করলে তিনি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে লড়ে যাবেন বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে প্রথমে পঞ্চাশটি, পরে শতাধিক এবং বেলা গড়িয়ে ভোট শেষ হওয়ার মুহুর্তে দুইশ ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ করা হয়।
সর্বশেষ বিকাল তিনটার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বলেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে গাজীপুরের নির্বাচনে দুইশর উপরে ভোটকেন্দ্র দখল করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধর করে বের করে দেয়া হয়েছে, হাসিনা মার্কা নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে না।’