প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক থাকার দাবি তোলা এক প্রাক্তন পর্নো তারকার ব্যাপারে তির্যক মন্তব্য করেছেন তার আইনজীবী। রুডি জিলিয়ানি নামে ওই আইনজীবী বলেন, যৌনতা যার পেশা, তিনি কোনো শ্রদ্ধা পেতে পারেন না। তার ভাষ্য, ‘আমি নারীদেরকে শ্রদ্ধা করি। সুন্দরী নারী বা যেসব নারীর মূল্যবোধ আছে।
কিন্তু যেই নারী তার দেহ বিক্রি করেন, তাকে আমি শ্রদ্ধা করি না। টাকার জন্য দেহ বিক্রি করেন যিনি তার কোনো সুনাম থাকতে পারে না।’ এ খবর দিয়েছে বিবিসি।খবরে বলা হয়, জুলিয়ানির এই মন্তব্য ভীষণ ক্ষেপেছেন স্টর্মি ড্যানিয়েলস নামে ওই পর্নো তারকার আইনজীবী মাইকেল অ্যাভেনাত্তি। অ্যাভেনাত্তি এমনকি জুলিয়ানিকে ‘পুরোদস্তর একজন শূকর’ হিসেবে আখ্যা দেন!ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি পেশায় আইনজীবী হলেও তিনি রাজনীতিক হিসেবেই বেশি খ্যাত। তিনি এক সময় নিউ ইয়র্ক শহরের মেয়র ছিলেন। বুধবার ইসরাইলের তেল আবিবে একটি বিনিয়োগ সম্মেলনে যোগ দিয়ে জুলিয়ানি বলেন, ‘আমি দুঃখিত যে আমি একজন পর্নো তারকাকে সেভাবে সম্মান করতে পারছি না, যেভাবে আমি একজন পেশাজীবী নারীকে করি। যেই নারীর মধ্যে কিছু একটা আছে, বা যার নিজের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আছে, বা যিনি অর্থের বিনিময়ে নিজের দেহ বিক্রি করবেন না, তার প্রতি যেমন শ্রদ্ধা আমার, তেমন শ্রদ্ধা একজন পর্নো তারকাকে করতে পারি না।’জুলিয়ানি এক পর্যায়ে বলেন, ‘আমি ডনাল্ডকে (ট্রাম্প) চিনি। তার তিনজন স্ত্রী ছিলেন। তাদের দিকে দেখুন। সুন্দরী, অভিজাত সব মহিলা। কিন্তু স্টর্মি ড্যানিয়েলস?’ এই কথা বলেই মাথা নাড়েন তিনি। তার এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ডেমোক্রেটিক দলীয় সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন। ওয়ারেন বলেন, তিন বার বিয়ের পিড়িতে বসা জুলিয়ানির এই মন্তব্য নারীদের প্রতি তার করা নিকৃষ্ট অপমান। ওয়ারেন বলেন, ‘তার বক্তব্য অনেকটা যেন এরকম যে, যেহেতু ট্রাম্পের স্ত্রীরা সুন্দরী ছিল, সেহেতু তিনি অন্য নারীদের সঙ্গে প্রতারণামূলক সম্পর্ক করতে পারেন না! এমন বক্তব্য সম্পূর্ণই ভুল।’স্টর্মি ড্যানিয়েলসের আইনজীবী মাইকেল অ্যাভেনাত্তি এক প্রতিক্রিয়ায় জুলিয়ানিকে ‘নারীবিদ্বেষী’ হিসেবেও আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘২০০৬ সালে জুলিয়ানির মক্কেল ট্রাম্পের তো এই ‘নৈতিকতাজনিত ইস্যু’ ছিল না!’ উল্লেখ্য, ২০০৬ সালেই ট্রাম্পের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক হয়েছিল বলে দাবি স্টর্মি ড্যানিয়েলসের।
এই বছরের এপ্রিলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন স্টর্মি ড্যানিয়েলস। স্টর্মির অভিযোগ, তার বক্তব্যকে মিথ্যা দাবি করে ট্রাম্প তার সুনাম ক্ষুণ করার চেষ্টা করছেন।অপরদিকে ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে মামলা করেছেন। উল্লেখ্য, ট্রাম্পের আরেক আইনজীবী ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে তার ও ট্রাম্পের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে কিছু না বলতে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলারের বিনিময়ে চুক্তি করেছিলেন। ওই চুক্তি ভঙ্গের বিরুদ্ধেই মামলা করছেন ট্রাম্প।