গত কয়েকদিন ধরেই দেশের রাজনীতিতে আলোচিত নাম লর্ড অ্যালেক্সান্ডার কার্লাইল। বৃটেনের হাউস অব লর্ডসের প্রবীণ সদস্য তিনি, বিশিষ্ট আইনজীবীও। তবে তার আর একটি পরিচয়, বাংলাদেশে কারাবন্দি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী হিসেবেও নিযুক্ত হয়েছেন সম্প্রতি। তিনি দিল্লিতে আসছেন এবং সেখানে খালেদার মামলা নিয়ে কথা বলবেন, ঢাকা থেকে বিএনপি নেতারা যাবেন, এতে সরকার ক্ষুব্ধ- গত দুদিন এ সব খবর নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মিডিয়া ছিল সরব।
সবশেষ খবর হলো, কার্লাইলকে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কার্লাইল বুধবার গভীর রাতে দিল্লি বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। তখন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তাকে জানান যে, ভারত সরকার তার ভিসা প্রত্যাহার করেছে। এরপর তাকে দিল্লির বিমানবন্দর থেকেই লন্ডনের ফিরতি ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়। ‘আর এ ঘটনা নিয়ে ভারত, বাংলাদেশ এবং সম্ভবত যুক্তরাজ্যের সম্পর্কেও যে পরিমাণ তোলপাড় হয়ে গেল- তেমন নজির খুব কমই আছে’ বলে মন্তব্য করেছে বিবিসি। আর এদিকে দিল্লিতে কার্লাইলকে ঢুকতে না দেওয়ায় বিএনপি হতাশা প্রকাশ করেছে।
কেন আর কীভাবে লর্ড কার্লাইলকে ফেরত পাঠাল দিল্লি?
কার্লাইলের দিল্লিতে আসা, তাকে ফেরত পাঠানো, কেন ঢুকতে দেওয়া হলো না, লন্ডনে ফেরত গিয়ে তিনি কী বললেন এই নিয়ে বিবিসি বাংলা গতকাল সন্ধ্যায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটিতে সব বিষয় স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার হিথরো টু দিল্লি ফ্লাইট ১৬২ বুধবার রাতে ল্যান্ড করেছিল মিনিট কুড়ি দেরিতে। রাত ১১টারও একটু পরে যে ফ্লাইটটি লন্ডন থেকে নামল, সেখানে ছিলেন এমন একজন যাত্রী- যিনি দিল্লিতে পা রাখুন ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তা একেবারেই চাইছিল না। অথচ তার কাছে ভারতের বিজনেস ভিসা ছিল। যে কারণে ভারতের ফ্ল্যাগশিপ ক্যারিয়ার এয়ার ইন্ডিয়াও তাকে বিমানে উঠতে দিয়েছিল বিনা বাধাতেই। প্রবীণ, সত্তরোর্ধ্ব ওই ভদ্রলোকের নাম লর্ড অ্যালেক্সান্ডার কার্লাইল। বৃটেনের হাউস অব লর্ডসের প্রবীণ সদস্য তিনি, বিশিষ্ট আইনজীবীও। তবে তার আর একটি পরিচয়, বাংলাদেশে কারাবন্দি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী হিসেবেও নিযুক্ত হয়েছেন সম্প্রতি, আর সে কাজের সূত্রেই তার দিল্লিতে পা রাখা।
আসার দিনকয়েক আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়াকে কীভাবে ‘সাজানো মামলায়’ ও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ হেনস্থা করা হচ্ছে, দিল্লিতে এসে সংবাদ মাধ্যমের কাছে সেসব তুলে ধরাই তার উদ্দেশ্য। তার বাংলাদেশের ভিসার আবেদন ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলেই তিনি ঢাকার পরিবর্তে দিল্লিতে এসে ওই সংবাদ সম্মেলন করতে চান, এমনটাও জানিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু এ খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকেই দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে যে ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছিল, তাও ছিল নজিরবিহীন। বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্য ছিল, লর্ড কার্লাইল যদি দিল্লিতে এসে খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে কথা বলেন তাহলে সেটা হবে দিল্লির মাটিতে দাঁড়িয়ে একটা ‘পেইড পলিটিক্যাল ক্যাম্পেন’- অর্থাৎ পয়সা নিয়ে চালানো রাজনৈতিক প্রচারণার সামিল। ভারত যে এভাবে ‘তাদের মাটিকে বাংলাদেশ-বিরোধী প্রচারে’ কাজে লাগাতে দিতে পারে না, ঢাকার সেই মনোভাবও দিল্লির কাছে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল।
ভারতে ঢুকতে না পেরে লর্ড কার্লাইল লন্ডনে ফিরে গিয়ে সেখান থেকে একটি ভিডিও কনফারেন্সিং করেছেন। সেখানে তিনি দিল্লির সংবাদ মাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারকে তলব করে এ ব্যাপারে তাদের তীব্র আপত্তির কথাও জানিয়ে দিয়েছিলেন।
সেটা সত্যি হোক বা না হোক, ঘটনা হলো দিল্লিতে লর্ড কার্লাইলের পরিকল্পিত কর্মসূচি প্রায় প্রথম থেকেই বাধার মুখে পড়ে। যেমন প্রথমে স্থির ছিল, ১৩ জুলাই দিল্লির ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাবে (এফসিসি) তিনি সংবাদ সম্মেলন করবেন। কিন্তু ওই একই দিনে কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত এফসিসি-তে আসছেন, এই যুক্তি দেখিয়ে তারা লর্ড কার্লাইলের বুকিং বাতিল করে দেয়। বাধ্য হয়ে তিনি দিল্লির একটি পাঁচতারা হোটেলে বিকল্প ভেন্যুর ব্যবস্থা করেন- সংবাদ সম্মেলনও একদিন এগিয়ে আনা হয়।
লর্ড কার্লাইলের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘আমি যখন দিল্লিতে নেমে আমার ফোন অন করলাম, দেখি আমার ভিসা বাতিল করা হচ্ছে বলে আমাকে মেসেজ পাঠানো হয়েছে। ইমিগ্রেশন কাউন্টারে আমাকে জানানো হলো আমাকে ভারতে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। সত্যি কথা বলতে কি, ইমিগ্রেশনের কর্মীরা খুবই ভদ্র ও বিনীত ছিলেন, তারা আমার সঙ্গে এমনিতে খুবই সুন্দর আচরণ করেছেন। কিন্তু তাদের কাছে কোনো জবাবই ছিল না যে কেন আমাকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না’- ভিডিও সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন লর্ড কার্লাইল।
ভারতের জবাব অবশ্য এসে যায় এর কিছুক্ষণের মধ্যেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার জানিয়ে দেন, ‘লর্ড কার্লাইল যে কারণ দেখিয়ে ভিসার আবেদন করেছিলেন আর তার সফরের প্রকৃত উদ্দেশ্য- এসবের মধ্যে কোনো সাযুজ্য নেই বলেই আমরা তার ভিসা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ পরে গতকাল বিকেলে তিনি আরও যোগ করেন, ‘লর্ড কার্লাইল ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছেন- এমন সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে।’
এমনকি তিনি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধী দলের (বিএনপি) সম্পর্কেও সন্দেহ তৈরি করতে চাইছেন বলে রবীশ কুমার দাবি করেন। ওই মুখপাত্র আরও জানান, লর্ড কার্লাইল খুব ভালো করেই জানতেন তাকে ফিরে যেতে হবে- সে কারণেই তিনি বৃটিশ এয়ারওয়েজের বিমানের ‘রিটার্ন বোর্ডিং পাস’ নিয়েই এসেছিলেন।
যদিও এই যুক্তির সঙ্গে বৃটিশ আইনসভার প্রবীণ সদস্য একেবারেই একমত নন। লন্ডন থেকে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বলেন, হিথরোতে তার ভারতীয় ভিসা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে অন্তত দুবার চেক করা হয়েছিল, কিন্তু তাতে কোনো অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি।
ভারত সরকারকে রাজি করিয়ে দিল্লিতে ঢোকার ব্যবস্থা করা যায় কি না, সে জন্য লর্ড কার্লাইল দিল্লি বিমানবন্দর থেকে ভারতে নিযুক্ত বৃটিশ ডেপুটি হাই কমিশনারকেও ফোন করেছিলেন। কিন্তু লর্ড কার্লাইলের দাবি অনুযায়ী, তিনিও এ ব্যাপারে তার অসহায়তা ব্যক্ত করেন এবং পরিষ্কার জানিয়ে দেন ভারতের সিদ্ধান্ত নড়চড় হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এর কিছুক্ষণ পরই তাকে বৃটিশ এয়ারওয়েজের লন্ডনগামী ফিরতি বিমানে উঠিয়ে দেওয়া হয়।
লন্ডনে নামার মাত্র দুঘণ্টার মধ্যেই স্কাইপ কলে তিনি দিল্লির মিডিয়ার সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে মিলিত হন। লর্ড কার্লাইল সেখানে বলেন, ‘ভারতীয় গণতন্ত্রের প্রতি আমার শ্রদ্ধা চুরমার হয়ে গেছে। রাজনৈতিক চাপের মুখে তারা যেভাবে নতি স্বীকার করলো এবং সত্তর বছর বয়সী একজন পার্লামেন্টারিয়ানের সঙ্গে যে আচরণ করল তাতে তাদের লজ্জিত হওয়া উচিত, কৈফিয়ত দেওয়া উচিত।’ তিনি পুরো বিষয়টি লন্ডনে খুব শিগগিরই বিস্তারিত সংবাদ সম্মেলন করে জানাবেন বলেও জানান।
ভারতের বিমানবন্দরে যে অল্প কিছুক্ষণ তিনি ছিলেন, সেখানে শুধুমাত্র একজন তরুণ পোর্টার তাকে অসম্ভব সাহায্য করেছিল বলেও যোগ করেন লর্ড কার্লাইল। ‘ভারতে ওই একজন মাত্র লোকের ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করেছে’। সাকুল্যে তিনি দিল্লির মাটিতে ছিলেন তিন ঘণ্টা। কিন্তু ওই তিনটি ঘণ্টাকে ঘিরে ভারত, বাংলাদেশ এবং সম্ভবত যুক্তরাজ্যের সম্পর্কেও যে পরিমাণ তোলপাড় হয়ে গেল- তেমন নজির খুব কমই আছে!
বিএনপি হতাশ ও মর্মাহত
কার্লাইলকে দিল্লি থেকে ফেরত দেওয়ায় মর্মাহত ও হতাশ হয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আইনজীবী বৃটিশ ‘হাউজ অব লর্ডস’র সদস্য লর্ড কার্লাইলকে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার খবর জেনে আমরা বিস্মিত হয়েছি। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে মুক্তচিন্তা অনুশীলনের সঙ্গে এই ঘটনা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে আমরা মনে করি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আরও মনে করি যে বাংলাদেশের অনির্বাচিত সরকার দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে এদেশে গণতন্ত্র অনুশীলনে যে বাধা সৃষ্টি করেছে তার প্রতিবাদ জানানোর জন্য বিশ্বখ্যাত আইনজীবী লর্ড কার্লাইল দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলেন। বাংলাদেশ সরকার তাকে ভিসা না দেওয়ার কারণেই লর্ড কার্লাইল ভারতে আসতে চেয়েছিলেন। তাকে ভারতে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় আমরা মর্মাহত। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে চলমান স্বৈরতান্ত্রিক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের অব্যাহত আন্দোলনের প্রতি মুক্তবিশ্বের সমর্থন থাকবে।’
কার্লাইলকে কেন বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হচ্ছে না, এমন প্রশ্ন তুলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, তাকে ভারতে কেন ঢুকতে দেওয়া হলো না সে বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। এটা ভারত সরকারের ব্যাপার। কিন্তু তিনি কেন বাংলাদেশে আসতে পারেন না? বাংলাদেশ কেন তাকে ভিসা দিচ্ছে না? গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় এই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘আমরা তো তাকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। কেন আজ পর্যন্ত তাকে বাংলাদেশের ভিসা দেওয়া হলো না? স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি খালেদা জিয়ার আইনি সহায়তা পাওয়ারও অধিকার রয়েছে।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, লর্ড কার্লাইলের নিয়োগ থেকে শুরু করে সব কিছু দেখা হচ্ছে লন্ডন থেকে। আর এ কারণেই দলের আইনজীবীসহ অনেকেই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চান না। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান গতকাল আজকালের খবরকে বলেন, ‘কার্লাইলের ভারত সফর নিয়ে আমার জানা নেই। ভিসা দেওয়ার পরেও কেন থাকে দেশে ঢুকতে দেওয়া হয়নি সেটি আমি বলতে পারছি না। তবে শুনেছি বাংলাদেশে আসার জন্য ভিসা চেয়েও পাননি। আর ভারতে ভিসা পেয়েও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনটি হলে তিনি আইনিভাবেই পদক্ষেপ নিতে পারেন।’
কার্লাইলের ভারত সফরকে কেন্দ্র করে বিএনপির আইনজীবীরাও তৎপর ছিলেন। বিশেষ করে দুদিন আগে ভারতে যান বিএনপির আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। আগে থেকেই ভারতে অবস্থান করছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুসহ বেশ কয়েকজন নেতা।
‘খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে কার্লাইল মন্তব্য করলে আদালতের নজরে আনা হবে’: আইনজীবী হিসেবে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে জনসম্মুখে কথা বলা আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার আপিল চলাকালে বৃটিশ আইনজীবী লর্ড কার্লাইল যদি কোনো বিরূপ মন্তব্য করেন, তবে তা আদালতের নজরে আনা হবে।’ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
কার্লাইল যদি অন্য কোনো দেশে বসে মামলার বিষয়ে মন্তব্য করেন, সেক্ষত্রে আপনারা তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে দুদকের এই আইনজীবী বলেন, ‘আদালত অবমাননার অভিযোগ আনতে হলে ঘটনা ঘটতে হবে বাংলাদেশের মধ্যে। আমাদের সীমার মধ্যে বসে মন্তব্য করলে, তবেই তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা যাবে। তারপরও তিনি যদি সংবাদ সম্মেলন করেন অবশ্যই আদালতের নজরে আনবো।’
খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘তিনি (কার্লাইল) একজন হাই প্রোফাইল ল’ইয়ার। কিন্তু তিনি যে কাজটা করতে যাচ্ছেন, সেটা অত্যন্ত অসৌজন্যমূলক। তিনি ভারতে গিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের (বাংলাদেশের) বিচারব্যবস্থা নিয়ে মন্তব্য করবেন, সমালোচনা করবেন, এটা কোনো সুস্থ-বিবেকবান মানুষ গ্রহণ করবে না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। তিনি ভারতে যেতেই পারেন। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের বিরুদ্ধে আরেকটি দেশে গিয়ে মন্তব্য করবেন, এটা তার পক্ষ থেকে আমরা আশা করিনি। কাগজে (দৈনিক পত্রিকায়) যেটুকু জেনেছি, তিনি এ মামলা (জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট) নিয়ে কথা বলবেন। এ মামলাটি আপিল পেন্ডিং আছে। আপিলের রায়ে কী হবে, সেটা আমরাও জানি না। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরাও জানেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিচারাধীন একটি মামলা নিয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করি না। এখানে রায়ে কী হবে, না হবে, তা তো আমরা জানি না। মাত্র (বৃহস্পতিবার) এ মামলার আপিল শুনানি শুরু হলো। একজন সাধারণ মানুষ ভুল করতে পারেন। কিন্তু একজন আইনজীবী হয়ে তার তো এটা ভুল হওয়ার কথা নয়।’