অনলাইন ডেস্ক: আবারও খুলছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অভিবাসন ব্যয় বাড়ানোর অভিযোগে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর চলতি পদ্ধতি গত জুন মাসে বাতিল করেছিল মালয়েশিয়া সরকার। এখন সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য সমান সুযোগ রেখে শ্রমবাজার খোলা সিদ্ধান্তের কথা সে দেশের গণমাধ্যমকে জানিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ।
২০১৬ সালের আগে বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেকোনো রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে পারতো। ওই বছর মালয়েশিয়ার সরকার নতুন পদ্ধতিতে বাংলাদেশের ১০টি এজেন্সিকে নির্ধারণ করে দেয় যারা সেদেশে শ্রমিক পাঠাতে পারবে। কিন্তু সিন্ডিকেটের অভিযোগ ওঠার পর বাংলাদেশের ওই ১০টি এজেন্সির কর্মকাণ্ড স্থগিত করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। মালয়েশিয়ায় যেসব বিদেশি শ্রমিক কাজ করেন তাদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ বাংলাদেশের। বাংলাদেশি শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে মনোপলি ব্যবসা করছিল বেসরকারি ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি। মাহাথির মোহাম্মদ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই সুযোগ বন্ধ করে দেন। সেই বন্ধ হওয়া শ্রম বাজার সবার জন্য সমান সুবিধা রেখে খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে মাহাথিরের সরকার।
শিগগির মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদনপ্রাপ্ত সব রিক্রুটিং এজেন্সি। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ আশ্বাস দিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে যে অনুমোদিত এজেন্টরা বিদেশে কর্মী পাঠায়, শিগগির তাদের সবাইকে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু কর্মীদের আবেদনপত্র প্রক্রিয়াকরণের অনুমোদন দেওয়া হবে। মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী মনে করছেন, সবাইকে এই সুযোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে এজন্সিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান সৃষ্টি হবে যা কর্মীদের জন্য ইতিবাচক হবে।
মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট ভবনে বিদেশি কর্মীদের ব্যবস্থাপনা শীর্ষক এক বৈঠকে গতকাল মঙ্গলবার মাহাথির জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। মালয়েশিয়াকে জানানো হয়েছে, মাত্র ১০টি এজেন্সি একচেটিয়াভাবে কর্মী পাঠানোর সুযোগ পায় বলে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু বাংলাদেশি কর্মীদের জনপ্রতি ২০,০০০ মালয়েশীয় রিঙ্গিত পর্যন্ত দিতে হয় এজেন্সিগুলোকে। আমরা সমস্ত এজেন্ট পর্যন্ত এটি বিস্তৃত করতে চাই যেন সেখানে প্রতিযোগিতা থাকে।
মাহাথির আরও বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশে বিদেশি কর্মীদের বিভিন্ন বিষয় দেখভালের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করতে চান তিনি। যে দেশ থেকেই কর্মী নিয়োগ দেওয়া হোক না কেন, সবাইকে ওই স্বাধীন কমিশনের একক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে চান। মাহাথির জানান, একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা ওই কমিশনের নেতৃত্বে থাকবেন। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কর্মীদের নীতি ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়গুলোর দেখাশোনা করা হবে। শ্রমবাজার সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ও বিশ্লেষণের প্রতিও নজর রাখা হবে।