রাজধানীতে গভীর রাতে সড়কে তল্লাশির নামে এক তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় জড়িত রামপুরা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ইকবালসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ অক্টোবর) পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সোহেল রানা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই ঘটনায় চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের একজন রামপুরা থানার এএসআই। বাকি তিনজন পিএমও (পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট) পূর্ব বিভাগের।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় মোট পাঁচজনকে সনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ডিএমপির সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (খিলগাঁও জোন) নাদিয়া জুঁইকে এ ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জানতে চাইলে নাদিয়া জুঁই বলেন, আমাদের তদন্ত চলছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে সোমবার (২২ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টার দিকে রামপুরা এলাকায় অটোরিকশা থামিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন পুলিশের একাধিক সদস্য। ওই তরুণী এসব ঘটনার প্রতিবাদ করলে তার পরিবারের সদস্যদের নিয়েও খারাপ মন্তব্য করেন পুলিশ সদস্যরা।
ওই তরুণীর ব্যাগ তল্লাশির কথা বলে তার অটোরিকশা থামিয়েছিল পুলিশ। তবে তরুণী একাধিকবার তার ব্যাগ তল্লাশি করতে বললেও তা না করেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তরুণীর সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা।
তাবে হেনস্তার স্বীকার ওই তরুণীর সঠিক পরিচয় এখনো জানাতে পারেনি। ওই তরুণীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেলে এ ঘটনার আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানায় তদন্ত কর্মকর্তা।
এদিকে এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে ফেসবুকে ডিএমপির ভেরিফাইড পেজে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পুলিশ চেকপোস্টে সিএনজি অটোরিকশা আরোহী এক নারীর সঙ্গে পুলিশের বাদানুবাদের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম এক ফেসবুক পোস্টে জানান, ভিডিও ধারণকারী পুলিশ সদস্যদের শনাক্ত করা গেছে। সম্মানিত কমিশনার মহোদয়ের অনুমতিক্রমে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।
আশা করি এবং অবশ্যই আপনারাও আশা করবেন যে, মামলার মাধ্যমেই সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হচ্ছে। আপনারা জানবেন যে, প্রত্যেকটা প্রোসেডিংয়ের নিয়মকানুন আছে, সেসব আমলে নিয়েই এগুতে হচ্ছে বলে সময় একটু লাগছে কিন্তু শাস্তি নিশ্চিত।