ডেস্ক : বাংলাদেশের রাজনৈতিক মেরুকরণে মূলত দুটি পক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে, অন্যটি বিএনপির। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতার জন্য আ. লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি ইতোমধ্যে শেষ হলেও বিএনপি শুরু করেছে মাত্র। দুই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কয়েক হাজার ফরম জমা পড়ার পর তা কীভাবে বাছাই করা হবে, সেটিও বেশ আগ্রহের বিষয়।
আ. লীগের মনোনয়ন ফরম কীভাবে বাছাই করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা গত দুই বছর ধরে মাঠপর্যায়ে জরিপ করছেন। অক্টোবরে সর্বশেষ জরিপের প্রতিবেদন এসেছে। তিন থেকে চার মাস পর পর সার্ভে রিপোর্ট এসেছে। বিভিন্ন সোর্স থেকে এই তথ্যগুলো নেয়া হয়েছে।
‘এই জরিপের জন্য এনজিও, শিক্ষকদের নিয়ে একটা দল আছে। দলের এ রকম পাঁচ থেকে ছয়টি সোর্স রয়েছে। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যে এলাকায় একজন প্রার্থীর সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা সবচেয়ে বেশি এবং ক্লিন ইমেজ আছে তাকে প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হবে’, বলেন হানিফ।
আ. লীগের মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দুটি মনোনয়ন বোর্ড রয়েছে। একটা সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড এবং অন্যটি স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড। দুই বোর্ডের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
মাহবুবুল আলম হানিফ জানান, আমাদের যে জরিপ দল রয়েছে তারা একটা নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের বাইরে ওই এলাকায় সম্ভাব্য অন্য সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। সেসব দলের প্রার্থীদের ব্যাপারে এলাকায় একইভাবে জরিপ চালিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে বিএনপি কীভাবে তাদের প্রার্থী বাছাই করবে জানতে চাইলে দলটির স্থানীয় কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, প্রার্থী নির্বাচনে আমাদের অনেক মানদণ্ড আছে। প্রধান বিষয় হলো দলের জন্য তার অবদানটা কী সেটা আমরা দেখব, আর গত ১০ বছরে যে সংগ্রাম হল, আন্দোলন হলো সেই আন্দোলন, তার ভূমিকা কী ছিল সেটা আমরা দেখব। তার আর্থিক সচ্ছলতা আমরা বিবেচনা করব। তৃনমূল পর্যায়ের আমাদের সংগঠনের ব্যক্তিদের মতামত নেবো।
তিনি বলেন, অনেক এলাকা আছে যেখানে মানুষ বিএনপি করেন না কিন্তু বিজ্ঞ, শিক্ষিত যারা তাদের মতামত নেয়ার চেষ্টা করি। তারপর দেখি প্রার্থী জিতবে কিনা। এটা একটা বড় মাপকাঠি। হয়তো একটা প্রার্থীর সবকিছু আছে কিন্তু সে হয়তো ভোট পাবে না অথবা নির্বাচনে জিতবে না। সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে পারে। তবে ৯৫ ভাগ জায়গায় যেসব মাপকাঠির কথা বললাম সেগুলো বিবেচনায় আনা হবে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে। যখন আমরা প্রার্থীদের ডাকব তখন ৫ বছরের জরিপের এসব তথ্যগুলো আমাদের সামনে থাকবে।
মওদুদ আহমদ বলেন, মোটামুটি নির্ভরযোগ্য সোর্স থেকে তারা তথ্য সংগ্রহ করেন। সেগুলো আবার ‘ক্রস-চেক’ করেন। সংসদীয় পার্লামেন্টারি বোর্ড এই প্রার্থী নির্বাচন করবেন। তবে বোর্ডের প্রধান খালেদা জিয়া এখন দুর্নীতির দায়ে কারাগারে রয়েছেন। সেক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। ওনার অনুমোদন নিয়ে আমরা ঘোষণা দেব। আমরা নিজেরা কোনও চূড়ান্ত ঘোষণা দেব না।