ইউটিউবার সালমান মুক্তাদির। ফেসুবকে তার ফ্যান ফলোয়ারের অভাব নেই। তিনি প্রাংক ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে প্রকাশ করেন। নিজের ইচ্ছেমতো যা খুশি বানান। যার জন্য কোন স্কুল কিংবা গুরু দরকার হয় না। মনে যা চাই, নিজের পরিচিতদের দিয়ে তা বানিয়ে ফেলান। আর এই ইউটিউবারের আছে নারী কেলেঙ্কারি। একাধিকার মেয়েদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যার সর্বশেষ সংযোজন মিস ওয়ার্ল্ড জেসিয়া। তার সঙ্গে লিভ টুগেদার করতো। ঘনিষ্ট ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করতো। আর নিজের পার্সোনাল এমনকিছু প্রকাশ করার ক্ষেত্রে তার সাফ জবাব,‘ এসব আলোচনা থেকেই আমি টাকা আয় করি। আমার প্রতি মিনিটে টাকা আয় হয়।’ এরাও আবার তারকা। এদের ডেকে এনে কথা শোনা হয়। যার বদলে হিরো আলমদেরও উথান।
দিন দিন বেড়েই চলেছে ইউটিউবের জনপ্রিয়তা। চোখের পলকেই মিলছে বিনোদনের বর্ণিল আয়োজন। গান, নাটক, সিনেমার বিশাল এক ভান্ডার ইউটিউবে। আর তার সঙ্গে নানা রকমের মজাদার ভিডিও তো রয়েছেই।
এখানে অর্থ উপার্জনের উপায়টি বেশ সহজ, ফলে বানের পানির মতো এখানে বাড়ছে পেশাদারীত্ব। ইউটিউবের মতো ফেসবুকে লাইভে টাকা আয় করার সুযোগ এখনো যুক্ত না হলেও এটা অনেকের কাছেই নেশার মতো। তাই ঘরে-বাইরে-ক্যাম্পাসে-অফিসে সর্বত্রই দেখা যায় হাতে হাতে মোবাইল ক্যামেরা ওপেন করে ভিডিও করার ব্যস্ততা। উদ্দেশ্য ইউটিউবে আপলোড করে ভিউ বাড়িয়ে টাকা কামানো। ফেসবুক লাইভে গিয়ে নিজের ফ্যান-ফলোয়ার বাড়ানোর চেষ্টা। অপচেষ্টা বললেও ভুল নয়।
যার যেমন ইচ্ছে, যেখানে ইচ্ছে, যা ইচ্ছে তাই ভিডিও করে বেড়াচ্ছেন। যেখানে খুশি সেখানে বসেই লাইভে চলে যাচ্ছেন। আশপাশের মানুষগুলো তাতে কেমন বোধ করছেন সে ব্যপারে ভ্রুক্ষেপ নেই। ইউটিউবে যা আপলোড হচ্ছে সেটাই বা সমাজ বা বিনোদনের জন্য কতোটা সিদ্ধ তাও ভাবছেন না অনেকে।
সাম্প্রতিকালে ইউটিউবাররা বিড়ম্বনার তৈরি করে বেড়াচ্ছেন শোবিজে। নাটক-সিনেমা বা যে কোনো বিষয়ের অনুষ্ঠানে তারকা উপস্থিতি থাকলেই দেখা যায় হাতে হাতে মোবাইল ক্যামেরা চালু করে ভিডিও করা হচ্ছে। নামপরিচয়হীন ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওগ্রাফাররা অদ্ভূত উপায়ে ভিডিওতে ব্যস্ত থাকে। কেউ কেউ সাংবাদিক পরিচয়ে আসে। এসে নিজের ব্যবসার উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা করছেন। সাংবাদিক হলেও অখ্যাত সব নিউজ পোর্টাল বা অনলাইন রেডিও-টেলিভিশনের সঙ্গে যুক্ত তারা। সংবাদ প্রকাশের চেয়ে তারা ভিডিওতেই ব্যস্ত থাকে। উদ্দেশ্য কেবলই অর্থ উপার্জন; সাংবাদিকতা সেখানে হাতিয়ার মাত্র।
তারাকারাও বিষয়টিকে বিব্রতকর ও বিরক্তি হিসেবে নিচ্ছেন। বেশ কিছু অনুষ্ঠানে তারকাদের সঙ্গে তর্কও করতে দেখা গেছে ইউটিউবারদের। তারকাদের প্রস্তাব করা হয় এইসব ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য। এ নিয়ে অনেকেই বিরক্ত প্রকাশ করছে।
পাশাপাশি ফেসবুক লাইভে যাওয়া মানুষগুলোও এইসব অনুষ্ঠানে বিরক্তির কারণ হচ্ছেন। তারকা এলেই মোবাইল বা ক্যামেরা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে সৃষ্টি করছেন বিশৃঙ্খলা। এসব লাইভে যাওয়া উটকো ঝামেলা সৃষ্টি করা বেশিরভাগেরই বিনোদন জগতের মানুষদের সঙ্গে তেমন কোন সম্পর্ক নেই। মিডিয়ার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত না থাকা এইসব মানুষ লাইভে গিয়ে প্রকাশ করে দিচ্ছেন মিডিয়ার মানুষদের একান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্ত ও কথাগুলো। এতে করে নানা রকম ঝামেলাই তৈরি হচ্ছে।
এইসব অপেশাদার, তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে অজ্ঞ মানুষদের ব্যাপারে সচেতন হওয়াটা জরুরি মনে করছেন শোবিজের সবাই। যে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজকরা এই বিষয়টির প্রতি কড়া নজর রাখলেই এতে সমাধান আসবে বলে মনে করেন তারা। পাশাপাশি তারকারাও কারো ভিডিওতে বা লাইভে মুখ দেখানোর আগে তাদের পেশাদারীত্ব, পরিচয় জেনে নেবেন বলেও অনেকে অনুরোধ করছেন। আবার শুটিং স্পটেও এদের উৎপাত হয়, তা নিয়ে অনেক তারকাই বিরক্ত।