সুবর্ণা মুস্তাফার সঙ্গে একবার হুমায়ুন ফরিদীর প্রচণ্ড ঝগড়া হলো। রাগ করে সুবর্ণা অন্য রুমে গিয়ে দরজা আটকে ঘুমিয়ে পড়লেন। সুবর্ণা সকালে দরজা খুলে দেখেন, যেই রুমে ঝগড়া হয়েছিল, সেই রুমের মেঝে থেকে ছাদের দেয়াল পর্যন্ত একটি কথাই লিখে পুরো রুমকে ভরে ফেলা হয়েছে, `সুবর্ণা, আমি তোমাকে ভালোবাসি’।
এত ভালোবাসাও তাদের বিচ্ছেদ ঠেকাতে পারেনি, ২০০৮ সালে ডিভোর্স হয়। কারণ ভালোবাসা রং বদলায়…।’ কি প্রেম ছিল তখন ফরিদী-সুবর্ণার। অনেকে বলে এই বিচ্ছেদই খুব একা করে দেয় ফরিদীকে। আর সেই একাকিত্ব জীবনই মৃত্যু ডেকে ফরিদীর।
জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন- ‘প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়।’ এই জীবনানন্দকে একবার দেখেই বিয়ের পিঁড়িতে বসে লাবণ্যপ্রভা। তার প্রেমও একসময় মুছে যায়। মুক্তির জন্য ছটফট করে লাবণ্য। গুলতেকিন নামের ক্লাস টেনের সেই কিশোরী হুমায়ুনের প্রেমে অন্ধ হয়ে বিয়ে করে ফেলে। তখন হুমায়ূন আহমেদের কী বা ছিল? অর্থ ধন দৌলত যে কিছুই ছিল না, তা তিনি নিজেই বলে গেছেন। তবুও কিশোরীর ভালবাসা ছিল তার জন্য। কিন্তু সেই বিয়েও টিকে রইলো না। হুমায়ূন হাটলো অন্য পথে।
১৯৬১ সালে জহির রায়হান পরিচালিত ‘কখনো আসেনি’ ছবিতে অভিনয় করেন সুমিতা দেবী। একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে জহির রায়হানের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন সুমিতা। এরপর প্রেমের সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায়। পরিচয়ের বছরই বিয়ে করেন। ধর্মান্তরিত হয়ে সুমিতা থেকে হয়ে জান নিলুফার বেগম। পর্দায় তিনি সুমিতাই থেকে গেলেন। তাঁদের দুই সন্তান অনল রায়হান ও বিপুল রায়হান। এই দাম্পত্যের পরবর্তী পাঁচ বছরের সুখি জীবনে একপর্যায়ে সম্পর্কে ফাটল ধরে। জহির রায়হান তাদের বিচ্ছেদের পর সুমিতা দেবীকে ২৫ পাতার এক আবেগময় চিঠি লেখেন। তিনি চিঠিতে সুমিতা দেবীকে সম্বোধন করেন আপনি ও মিঠু-বিপুলের মা বলে। সেই চিঠিতে উঠে আসে কতটাই না প্রেম ছিল তাদের।
আসলেই ভালোবাসা রং বদলায়। কলকাতার জনপ্রিয় সিনেমা ‘বেলাশেষে’। সিনেমাটিতে প্রেমের কঠিন ব্যাপারটি সহজভাবে বুঝানো হয়েছে। সেখানের কিছু সংলা, `হাতের ওপর হাত রাখা খুব সহজ, সারাজীবন বইতে পারা সহজ নয়!’ সহজ না হওয়ার কারণ ঐ একটাই-`ভালোবাসা রং বদলায়।’
নাটকের দুই মেধাবী মানুষ গাজী রাকায়েত ও আফসানা মিমি। প্রেম করে বিয়ে করলেন। সংসারটা টিকলো না। রাকায়াত আবার সংসারী হলেও, আর বিয়ে করেননি আফসানা মিমি। টিকেনি এ প্রজন্মের তাহসান- মিথিলা, বাপ্পা-চাদনীর প্রেম ও অত:পর ভালবাসা।
সেই তৃতীয় শ্রেনী থেকে অর্ণবের সাহানাকে ভালো লাগতো। ভালোলাগা ভালোবাসায় পরিণত হতে স্কুল পেরুতে হয়নি। জুটি হয়ে গান করা। বিয়েটাও হয়ে যায়। কিন্তু সেই বিয়ে আর টিকলো না।
প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপার প্রথম স্বামী ছিলেন নৃত্যশিল্পী হাসান ইমাম। বেশ কিছুদিন সংসার করার পর তাদের ঘর ভাঙ্গে। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাদের।
সামিনা চৌধুরী যে নকিব খানের স্ত্রী ছিলেন। সেটা এ প্রজন্মের অনেকেই জানেন না। কিন্তু একসময়ে তারা প্রেম করে বিয়ে করেছিল। নীরবে নিশ্চুপে সে প্রেম ও বিয়ে ভেঙ্গে যায়।
মানসিক অ্যাডজাস্টমেন্টের অভাবই তাদের আলাদা করে দেয়। এত এত প্রেমও বেধে রাখতে পারে না তাদের।