এই প্রথমবার আমন্ত্রিত দেশ হিসাবে ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিল ভারত। এদিন সম্মেলনে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তবে প্রথম বারের জন্য আবু ধাবিতে পৃথিবীর ৫৭টি মুসলিম দেশের সংগঠন ‘অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)’-র বিদেশমন্ত্রীরদের পরিষদে ভারতকে আমন্ত্রণ জানানোয় অস্বস্তিতে পড়লেন পাক বিদেশমন্ত্রী। পাকিস্তানের আপত্তি থাকা স্বত্তেও ভারতকে আমন্ত্রণ জানায় ওআইসি।
সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে ভারতের হুমকির জবাবে পাকিস্তান অনেকবারই শান্তির পথে হাঁটার দাবি জানিয়েছে। একসাথে বসে সমস্যা মেটানোর কথা বলেছে। কিন্তু ভারত তাতে কান দেয়নি। বরং হামলা করেই ছেড়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে গেছে দুদিনেই।
ওআইসির বৈঠকে গিয়ে ভারত এখন দাবি করছে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাদের একসঙ্গে রুখতে হবে।
ওআইসির বৈঠকে গিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বক্তব্যে সুষমা পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করে বলেন, আমরা যদি মানবতাকে রক্ষা করতে চাই তাহলে যে সমস্ত দেশ সন্ত্রাসকে আশ্রয় দেয়, অর্থ সাহায্য করে তাদের এ ধরনের কাজ করা থেকে সরে আসার বার্তা দেয়া উচিত। তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও চরমপন্থার দুটি আলাদা নাম আছে। কিন্তু এই দুটিই ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা করে তৈরি হয়।
এই প্রথম ওআইসির সম্মেলনে হাজির থাকার ডাক পেয়েছে ভারত। পাকিস্তান শুরু থেকেই এ সংস্থার সদস্য। ইসলামাবাদ চেয়েছিল, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে যাতে ভারতকে আমন্ত্রণ জানানো না হয়। কিন্তু পাকিস্তানের সে অনুরোধ রক্ষা না করায় তারা এ সম্মেলন বয়কট করে।
এর আগে গত মঙ্গলবার পাকিস্তানে হামলার পর চীন সফরে গিয়ে সুষমা স্বরাজ ভারতের এ পদক্ষেপের পক্ষে বলেন, আত্মরক্ষার খাতিরেই ভারত এ হামলা চালিয়েছে। অভিযোগ করেন, সন্ত্রাস দমন করতে পাকিস্তান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলেই এ হামলা চালিয়েছে ভারত। একই সঙ্গে পুলওয়ামার ঘটনা নিয়ে ভারতের নাগরিকদের মধ্যে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে সেটাও তুলে ধরেছিলেন সুষমা। বলেছিলেন, আবার হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলেই পাকিস্তানে অভিযান চালিয়েছে ভারত।
কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতের আধা সামরিক বাহিনী সিআরপিএফের ৪৪ জন সদস্য নিহত হয়। এ ঘটনায় ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করতে থাকে। পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, প্রমাণ থাকলে দিন, আমরা ব্যবস্থা নেব। ভারত এ ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবেও পাকিস্তানকে এক ঘরে করার চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে বিফল হলে তারা নিজেরাই অর্থনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে দুর্বল করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এ সময় শান্তির বার্তা জানিয়ে বলেন, যুদ্ধ কোনো সমাধান হতে পারে না। আসুন আমরা শান্তির জন্য কাজ করি। তবে তিনি এ কথাও স্মরণ করিয়ে দেন যে, ভারতের পক্ষ থেকে কোনো হামলা হলে তারা তার উপযুক্ত জবাব দেবেন।
এ অবস্থা গত মঙ্গলবার ভারত হামলা চালায় পাকিস্তানে, বুধবারে পাকিস্তান হামলা চালায় ভারতে, ভারত জবাব দিতে আবারো পাকিস্তানে হামলা চালাতে গেলে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় দুটি বিমান বিধ্বস্ত হয় এবং একজন পাইলট গ্রেফতার হয়। বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের মধ্যে আবারো ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
COMMENTS