তাবৎ পৃথিবীতে ভারত সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ বলে পরিচিত। বহুজাতিক ও বহুভাষাভাষির দেশ ভারতের লোক সংখ্যা ১৩০ কোটি। ভোটার রয়েছে ৯০ কোটি। জাতি সংঘের তথ্য মতে দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী জনসংখ্যা ৩০ কোটি। ভারতের ১৭তম লোক সভার ২৯টি প্রদেশের ৫৪৩ টি আসনের ৭ ধাপের নির্বাচনী তফসিল ঘোষিত হয়েছে।
১১ এপ্রিল থেকে ১৯ শে মে পর্যন্ত চলবে এই নির্বাচন। এর মধ্যে ১১ এপ্রিল ৯১ টি, ১৮ এপ্রিল ৯৭টি, ২৩এপ্রিল ১১৫ টি, ২৯ এপ্রিল ৭১টি, ৬ মে ৫১টি, ১২মে ৫৯টি এবং ১৯ মে ৫৯ টি আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গণনা হবে ২৩ মে।
ভারতের নির্বাচন এশিয়া মহাদেশের সর্বস্তরের কৌতুহলের কারণ, অব্যাহত গনতান্ত্রিক সংস্কৃতি, ভারতবাসীর জাতীয়তাবাদ, নির্বাচন ব্যবস্থা গ্রহণ যোগ্যতা এবং বিজয়ী দলের প্রতি পরাজিত দলের শ্রদ্ধাবোধ। সবচেয়ে বড় বিষয়টি হল, ১৯৪৭ থেকে এযাবৎ ভারতীয় গনতন্ত্রে সেনা ছাউনীর কালোছায়া পড়েনি। ভারতের জন প্রতিনিধিত্বে তিন স্তরের লোকসভা, রাজ্যসভা বিধানসভা, নির্বাচনে ছোট খাটো ঘটনা ব্যতিত বিতকির্ত কোন বড় ধরনের কলঙ্ক নেই বললেই চলে। ভারতের কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষের ‘লোকসভা’ কেন্দ্রীয় কক্ষের ‘রাজ্যসভা’, প্রতিটি প্রদেশের ‘বিধান সভা’র নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের সচেতন মহলের কৌতুহলের শেষ থাকে না । কারণ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভারতের সহযোগিতা এবং প্রতিবেশী দেশ হওযায়।
বর্তমানে ভারতের রাজনৈতিক মোট দল ১২২টি এর মধ্যে জাতীয় রাজনৈতিক দল ৭টি,প্রাদেশিক রাজনৈতিক দল ৫৪টি, ননরিকগনাইজড ৬০ এর অধিক দল রয়েছে। বহুল আলোচিত,সমালোচিত এবং জন সম্পৃক্ত জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতৃত্বে রয়েছেন রাহুলগান্ধী।
১১ এপ্রিল থেকে ১৯ শে মে পর্যন্ত চলবে এই নির্বাচন। এর মধ্যে ১১ এপ্রিল ৯১ টি, ১৮ এপ্রিল ৯৭টি, ২৩এপ্রিল ১১৫ টি, ২৯ এপ্রিল ৭১টি, ৬ মে ৫১টি, ১২মে ৫৯টি এবং ১৯ মে ৫৯ টি আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গণনা হবে ২৩ মে।
ভারতের নির্বাচন এশিয়া মহাদেশের সর্বস্তরের কৌতুহলের কারণ, অব্যাহত গনতান্ত্রিক সংস্কৃতি, ভারতবাসীর জাতীয়তাবাদ, নির্বাচন ব্যবস্থা গ্রহণ যোগ্যতা এবং বিজয়ী দলের প্রতি পরাজিত দলের শ্রদ্ধাবোধ। সবচেয়ে বড় বিষয়টি হল, ১৯৪৭ থেকে এযাবৎ ভারতীয় গনতন্ত্রে সেনা ছাউনীর কালোছায়া পড়েনি। ভারতের জন প্রতিনিধিত্বে তিন স্তরের লোকসভা, রাজ্যসভা বিধানসভা, নির্বাচনে ছোট খাটো ঘটনা ব্যতিত বিতকির্ত কোন বড় ধরনের কলঙ্ক নেই বললেই চলে। ভারতের কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষের ‘লোকসভা’ কেন্দ্রীয় কক্ষের ‘রাজ্যসভা’, প্রতিটি প্রদেশের ‘বিধান সভা’র নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের সচেতন মহলের কৌতুহলের শেষ থাকে না । কারণ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভারতের সহযোগিতা এবং প্রতিবেশী দেশ হওযায়।
বর্তমানে ভারতের রাজনৈতিক মোট দল ১২২টি এর মধ্যে জাতীয় রাজনৈতিক দল ৭টি,প্রাদেশিক রাজনৈতিক দল ৫৪টি, ননরিকগনাইজড ৬০ এর অধিক দল রয়েছে। বহুল আলোচিত,সমালোচিত এবং জন সম্পৃক্ত জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতৃত্বে রয়েছেন রাহুলগান্ধী।
১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত অলইন্ডিয়া কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআইএম) এর নেতৃত্বে রয়েছেন সুবাভরম সুধাকর রেড্ডি। ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত মার্কসবাদী অল ইন্ডিয়া কমিউনিস্ট পার্টি(সিপিআইএম) এর নৈতৃত্ব দিচ্ছেন সিতারাম ইয়েচুরির। ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় জনতা পার্টি(বিজেপি)’র নেতৃত্বে রয়েছেন অমিতশাহ। ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বহুজন সমাজবাদী পার্টি (বিএসপি)’র নেতৃত্বে রয়েছেন কুমারী মায়াবতী। ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত অলইন্ডিয়া তৃনমূল কংগ্রেস এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন মমতা ব্যানার্জী। ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)’র নেতৃত্ব দিচ্ছেন সারদ পাওয়ার।
ভারতের লোকসভার আসন সংখ্যা ৫৪৫ টি, যার মধ্যে ২ টি অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের জন্য সংরক্ষিত। ৫৪৩ টি আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়ে আসছে। ১৯৪৭ সাল থেকে এ য়াবৎ: ১৬ বার নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ১১ বার সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভ করেছে অল ইন্ডিয়া ন্যাশনাল কংগ্রেস,৪ বার ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), একবার ১৯৭৭ সালে মোবারজি দেশাই’র জনতা পার্টি। ২০১৪ সালে ১৬তম লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্রমোদী’র ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক এলায়েন্স (এনডিএ), ৩৩৮ টি আসন পেয়ে কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালনা করছেন। অল ইন্ডিয়া ন্যাশনাল কংগ্রেস নেতৃত্বে ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ এলায়েন্স (ইউপিএ), মাত্র ৬০টি আসন নিয়ে বিরোধী দলে রয়েছেন। কৌতুহলিদের প্রশ্ন সপ্তদশ নির্বাচনে ‘মোদি’ না ‘গান্দী’, কে হবেন প্রধানমন্ত্রী। হিসাব - নিকাষ মিলাচ্ছে দিবারাত্রি। রাহুলগান্ধীর কংগ্রেস ভারতের সবচেয়ে পুরাতন দল,এই দলের রাষ্ট্র-পরিচালনায় ইতিহাস বিশাল। দীর্ঘদিন দলটি সরকারে ছিলো। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি’র বিজেপি কংগ্রেসকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে। কংগ্রেসের মত দলটির এমনটি তো হওয়ার কথা নয়! দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস দলের নেতা কর্মীদের লাগামহীন দুর্নীতি,অনিয়ম তাদের ভরাডুবি নিশ্চিত করেছেন। ফলে উগ্রসাম্প্রদায়িক বলে পরিচিত তৎকালীন গুজরাটের মূখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘ভারত গড়ার শ্লোগানে’র ভেলকি দেখিয়ে সাধারনের মানুষের মনজয় করায় তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পেরেছেন। ২০১৪ সালে নির্বাচনী প্রচারনায় মোদির প্রতিশ্রুতি ছিলো বিস্তর,এর মধ্যে প্রতিবছর দু’কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, দেশের ছয় লাখ গ্রামকে বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা। প্রত্যেক সংসদ সদস্যকে ৬টি করে গ্রাম দত্তক দিয়ে উন্নয়ন ঘটানো। কর্মসংস্থাপনের কিছুই হয়নি,তবে ১৮ হাজার গ্রামের বিদ্যুতায়ন ঘটেছে। গ্রাম উন্নয়নে তার সরকার দৃশ্যমান কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেন নি। কংগ্রেস আমলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ ছিলো তেলের মূল্য বৃদ্ধি। মোদির আমলে তা রোধ করা সম্ভব হয়নি বরং পেট্রোলের মূল্য বেড়ে যায়। প্রতিবেশি দেশগুলোর সাথে মোদি সরকারের সর্ম্পক তেমনটি ইতিবাচক নয়, নেপাল,চীন পাকিস্তানের এর সাথে নানা বিধ কারণে বিরোধ তুঙ্গে। কাশ্মমীর ও পুলওয়ানায় আত্মঘাতী হামলার নাটক মোদির জন্য দু:খজনক। বিগত কংগ্রেস আমলে বাংলাদেশের সাথে তিস্তা পানি বন্টন চুক্তির কোন সুরাহ এখনও হয়নি। তবে বিষয়টি পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য সরকারের হাতে হস্তান্তর করেছে।
ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সীমান্ত ‘মুজিব- ইন্দিরা’ চুক্তির অবসান নরেন্দ্রমোদীর আমলেই হয়েছে। অন্য কোন প্রতিবেশির দেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক ভাল না থাকলেও বাংলাদেশের সরকারের সাথে ভারতের যে কোন সরকারের সম্পর্ক সর্বদায় ভাল থাকে, রয়েছে এবং থাকবে।ভারতের সপ্তদশ নির্বাচন ঘিরে গবেষক, বিশ্লেষকদের ধারনার সাথে সাধারণ সচেতন ভোটারদের হিসাব একেবারেই মিলছে না। নরেন্দ্রমোদীর বিজেপি সমর্থিত ভোটাররা বলছেন,২৭২ আসন পেলেই সরকার গঠন করা যায়,২০১৪ সালে তাদের সমর্থিত নরেন্দ্রমোদীর (বিজেপি) আসন পেয়েছেন ২৮২টি জোট বন্ধ থাকায় তাদের সরকার গঠিত হয়েছিল ৩৩৮ আসন নিয়ে। এবারের নির্বাচনে ৩ শর মত আসন বিজেপিএকাই পাবে এমন বিশ্বাসে অটল তারা। তাদের বিশ্বাস, বিজেপির ভোট আগের তুলনায় বর্তমানে গ্রামে বেড়েছে। কারণ তাদের সরকার গ্রামে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও কৃষকের উন্নয়ন ঘটিয়েছে, রাস্তাঘাট সংস্কার ও নির্মান করতে পেরেছে,ডিজিটাল যোগাযোগ বৃ্িদ্ধ,বিদূৎ, আবাসন, স্যানিটেশন,গ্যাস সম্প্রসারণ এবং কর্মসংস্থানে তাদের সরকার যথেষ্ট গ্রামমুখী। সব মিলিয়ে নরেন্দ্রমোদী মাত্র পাঁচ বছরে যা করেছে, তা ব্যর্থতার চোখে দেখছেন না বরং বলছেন, সময় পেয়েছে মাত্র পাঁচ বছর। এছাড়া নরেন্দ্র সমর্থকরা মনে করছেন, তার সরকার প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি পুরণ করতে না পারলে ও দুনীতি এবং অনিয়মের মত অভিযোগ নেই নরেন্দ্রমোদী’র ও তার সরকারের। অপর দিকে কংগ্রেস সমর্থিত সাধারণ সচেতন ভোটরা মনে করছেন, এবার নরেন্দ্রমোদী কোন ভাবেই ক্ষমতায় আসতে পারছেন না, কারণ তিনি ও তাঁর সরকার সাধারনের জন্য কিছুই করতে পারেনি। হয়নি নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। ভারতের মধ্যপন্থী সাধারণ বিশ্লেষকরা মনে করছেন নরেন্দ্রমোদীর ‘নোটবন্ধী’ যেমন কালো টাকার মালিকদের গুড়িয়ে দিয়েছে,তেমনি জোটবন্ধী ভোট হওয়ার নরেন্দ্রমোদীর দলটি এগিয়ে আছে। নরেন্দ্রমোদীর দল বিজেপি প্রধান অমিত পুরোপুরি হিন্দুত্ববাদ প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন এতে করে অসচেতন, সামপ্রদায়িক, অজ্ঞ- অশিক্ষিত ভোটারদের মাঝে নরেন্দ্র ভক্তি বেড়েই চলছে। বিজেপি প্রধান অমিত শাহ ও নরেন্দ্রমোদীর হিন্দুত্ববাদ সাম্প্রদায়িক প্রচারণা অসাম্প্রদায়িক জনগোষ্ঠি ঘৃণার চোখে দেখছেন। সোনিয়ার পুত্র রাহুলগান্ধী দারিদ্র দূরীকরনে নতুন প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন,তাঁর প্রতিশ্রুতির বিরুদ্ধে নরেন্দ্রমোদী হিন্দুস্তান টাইমসে দেওয়ায় এক সাক্ষাৎকারে সোচ্চার কণ্ঠে বলেছেন, চার পুরুষ ধরে মিথ্যা বলছে কংগ্রেস ,একই পরিবারের ইন্দিরাগান্ধী, রাজীবগান্ধী, রাহুলগান্ধীর পরিবার বারবার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, দিচ্ছেন এবং দিয়ে যাচ্ছেন। সব কিছু মিলিয়ে নরেন্দ্রমোদী কঠোর পরিশ্রমী,ন্যায় নীতিতে অটল থাকায়,‘নরেন্দ্রমোদি বহুত আচ্ছা আদমী হ্যায়,’ বাক্যটি মাঝে মাঝে শোনা যাচ্ছে।
- রহিম আব্দুর রহিম (কলামিস্ট )
COMMENTS