চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবে এক লাখে পৌঁছেছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ১২১ জন। যদিও এপ্রিলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর বেসরকারি হিসাবে সারা দেশে এ পর্যন্ত কয়েক লাখ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়।
সর্বশেষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে সোমবার সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন গোপালগঞ্জের যুবক আল-মামুন আলম (৪২)।
সংশ্লিষ্টদের মতে, সাধারণত নভেম্বর থেকে ডেঙ্গুর সংক্রমণ থাকার কথা নয়। তবে এ বছর নভেম্বরেও প্রতিদিন গড়ে শতাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী বছর ডেঙ্গু মৌসুমে এ রোগটি আরও ভয়াবহ আকারে দেখা দিতে পারে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা যুগান্তরকে বলেন, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেকটা কমলেও এখনও প্রতিদিনই কিছুসংখ্যক আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে রোগী কমছে না। তিনি বলেন, এখন দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের। আমাদের কাজ আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া।
কিন্তু ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজধানীসহ সারা দেশে স্থানীয় সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। এজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্যোগী হয়ে সব পর্যায়ের স্টেকহোল্ডাদের নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপরেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্যানুযায়ী, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ৯৯ হাজার ৬৫৭ জন। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৯৮ হাজার ৮৫৬ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫৩৭ জন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৬৪ জন এবং অন্যান্য বিভাগে ২৭৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় (২৪ নভেম্বর সকাল ৮টা থেকে ২৫ নভেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১১২ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৫৩ জন, ঢাকার বাইরে ৫৯ জন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্যানুসারে, এ বছর ডেঙ্গু সন্দেহে ২৬৪ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৯৩ জনের মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণ করে ১২১টি মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম) ডা. আয়েশা আক্তার জানান, আগস্টে নিশ্চিত ডেঙ্গুজনিত মৃত্যু ঘটেছে ৬৫ জনের। জুলাইয়ে ৩৫ জন, জুনে ৬, সেপ্টেম্বরে ৪ এবং এপ্রিলে ২ জন। কন্ট্রোল রুমের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসা নিয়েছে ৫০ হাজার ৯০৫ জন। এর মধ্যে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩১ হাজার ৬৩ জন এবং বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে ১৯ হাজার ৮৪২ জন। এছাড়া ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪৮ হাজার ৭৫২ জন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮ হাজার ৫৭৯ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এসএসএমসি ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ৪ হাজার ৯৫৯ জন। এরপরই রয়েছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ৩ হাজার ৯৬৭ জন।
বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন রাজধানীর হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১৮৭৫ জন। এছাড়া সেন্ট্রাল হাসপাতালে এ পর্যন্ত ১৭১২ জন ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে খুলনায় ১১ হাজার ৭৭৭ জন।
গত ৭ দিনের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৯ নভেম্বর দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১২৪ জন, ২০ নভেম্বর ১১৭ জন, ২১ নভেম্বর ১২৩ জন, ২২ নভেম্বর ১০০ জন, ২৩ নভেম্বর ৯০ জন, ২৪ নভেম্বর ৯২ জন এবং ২৫ নভেম্বর ১১২ জন।
খুলনায় ডেঙ্গুজ্বরে যুবকের মৃত্যু : খুলনা ব্যুরো জানায়, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে খুলনায় আল-মামুন আলম (৪২) নামে একজন যুবক মারা গেছেন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (খুমেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার শুকতাইল ইউনিয়নে। খুমেকের ডাক্তার শৈলেন্দ্র নাথ সাংবাদিকদের বলেন, আলম ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে শনিবার হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে তিনি মারা যান।
- যুগান্তর রিপোর্ট
সর্বশেষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে সোমবার সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন গোপালগঞ্জের যুবক আল-মামুন আলম (৪২)।
সংশ্লিষ্টদের মতে, সাধারণত নভেম্বর থেকে ডেঙ্গুর সংক্রমণ থাকার কথা নয়। তবে এ বছর নভেম্বরেও প্রতিদিন গড়ে শতাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী বছর ডেঙ্গু মৌসুমে এ রোগটি আরও ভয়াবহ আকারে দেখা দিতে পারে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা যুগান্তরকে বলেন, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেকটা কমলেও এখনও প্রতিদিনই কিছুসংখ্যক আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে রোগী কমছে না। তিনি বলেন, এখন দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের। আমাদের কাজ আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া।
কিন্তু ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজধানীসহ সারা দেশে স্থানীয় সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। এজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্যোগী হয়ে সব পর্যায়ের স্টেকহোল্ডাদের নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপরেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্যানুযায়ী, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ৯৯ হাজার ৬৫৭ জন। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৯৮ হাজার ৮৫৬ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫৩৭ জন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৬৪ জন এবং অন্যান্য বিভাগে ২৭৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় (২৪ নভেম্বর সকাল ৮টা থেকে ২৫ নভেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১১২ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৫৩ জন, ঢাকার বাইরে ৫৯ জন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্যানুসারে, এ বছর ডেঙ্গু সন্দেহে ২৬৪ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৯৩ জনের মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণ করে ১২১টি মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম) ডা. আয়েশা আক্তার জানান, আগস্টে নিশ্চিত ডেঙ্গুজনিত মৃত্যু ঘটেছে ৬৫ জনের। জুলাইয়ে ৩৫ জন, জুনে ৬, সেপ্টেম্বরে ৪ এবং এপ্রিলে ২ জন। কন্ট্রোল রুমের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসা নিয়েছে ৫০ হাজার ৯০৫ জন। এর মধ্যে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩১ হাজার ৬৩ জন এবং বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে ১৯ হাজার ৮৪২ জন। এছাড়া ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪৮ হাজার ৭৫২ জন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮ হাজার ৫৭৯ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এসএসএমসি ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ৪ হাজার ৯৫৯ জন। এরপরই রয়েছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ৩ হাজার ৯৬৭ জন।
বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন রাজধানীর হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১৮৭৫ জন। এছাড়া সেন্ট্রাল হাসপাতালে এ পর্যন্ত ১৭১২ জন ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে খুলনায় ১১ হাজার ৭৭৭ জন।
গত ৭ দিনের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৯ নভেম্বর দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১২৪ জন, ২০ নভেম্বর ১১৭ জন, ২১ নভেম্বর ১২৩ জন, ২২ নভেম্বর ১০০ জন, ২৩ নভেম্বর ৯০ জন, ২৪ নভেম্বর ৯২ জন এবং ২৫ নভেম্বর ১১২ জন।
খুলনায় ডেঙ্গুজ্বরে যুবকের মৃত্যু : খুলনা ব্যুরো জানায়, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে খুলনায় আল-মামুন আলম (৪২) নামে একজন যুবক মারা গেছেন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (খুমেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার শুকতাইল ইউনিয়নে। খুমেকের ডাক্তার শৈলেন্দ্র নাথ সাংবাদিকদের বলেন, আলম ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে শনিবার হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে তিনি মারা যান।
- যুগান্তর রিপোর্ট
COMMENTS