বাড়ি লিখে না দেয়ায় অত্যাচার করতো দুই ছেলে। দিতো প্রাণনাশের হুমকি। তাদের ভয়ে পালিয়ে মেয়েদের কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন বাবা সত্তরোর্ধ্ব জহিরুল হক। চলতি বছরের ২৪ জুলাই ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিলেন তিনি। তবু কমেনি দুই ছেলে একরাম-আনোয়ারের নির্যাতন-হুমকি।
এবার নির্যাতন থেকে মুক্তি ও ছেলেদের বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জহিরুল হক। নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে দুই মেয়ে ও সাংবাদিকদের সামনেই অঝোরে কাঁদলেন বৃদ্ধ এ বাবা।
মঙ্গলবার গাজীপুরের একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এ সময় লিখিত বক্তব্যে জহিরুল হক জানান, ২৭ বছর প্যান-প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে চাকরি করেছেন। অবসর নিয়েছেন ২০০৮ সালে। এরপর গাজীপুর মহানগরের কামারজুরি এলাকায় পাঁচ কাঠা জমি কিনে অবসরের শেষ সম্বল দিয়ে একটি আধা পাকা বাড়ি নির্মাণ করেন।
তিনি আরো জানান, বড় ছেলে একরামুল হক ব্যবসার কথা বলে কৌশলে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তার কাছ থেকে। বাড়িটিও লিখে দেয়ার জন্য চাপ দেয় ছোট ছেলে আনোয়ার। এরপর দুই ভাই একসঙ্গে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো শুরু করে। নিরাপত্তাহীনতায় তিনি বাড়ি ছেড়ে মেয়ের বাসায় আশ্রয় নেন। পরে সেখানে গিয়েও বাড়ি লিখে দিতে চাপ দেয় এবং মারধর করে। এরপরও বাড়ি না পেয়ে ২৬ জুন অন্য লোককে বাবা সাজিয়ে টঙ্গী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গোপনে বাড়ি লিখে নেয় এবং জহিরুল হককে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয় দুই ছেলে।
এসব ঘটনায় ২৪ জুলাই গাজীপুর মেট্রো গাছা থানায় অভিযোগ করা হলে পুলিশের সহযোগিতায় বাড়ির দখল বুঝে পান জহিরুল হক। পুলিশ ছোট ছেলে আনোয়ারকে গ্রেফতার করে। ওই সময় বড় ছেলে একরামুল হক পলাতক ছিলো। এরপর থেকে সে গোপনে এসে বাবাকে বাড়ি ছাড়ার হুমকি দেয়।
বর্তমান পরিস্থিতিতে জহিরুল হক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রসাশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। এ সময় দুই ভাইয়ের বিচার চায় বৃদ্ধ জহিরুল হকের দুই মেয়েও।
ছোট মেয়ে মর্জিনা বলেন, শুধু ভাইরা নয়; ভাবিরাও অত্যাচার করতো আমাদের বাবাকে। সহ্য করতে না পেরে বাবা পালিয়ে আমার বাসায় চলে এসেছেন। এখানেও লোকজন নিয়ে হামলা করেছিল বড় ভাই একরামুল। শেষ বয়সে বাবার ওপর এমন নির্যাতনের বিচার ও ভাইদের গ্রেফতারে প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
COMMENTS