
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পূবাইলে আবুল কালাম ও তার স্ত্রী পুতুল খুনের রহস্য উন্মোচন করেছে গাজীপুর জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রির জের ধরে আবুল কালামের ভাগ্নি জামাই মো. পলাশ এ হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোতিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
শুক্রবার (২ অক্টোবর) দুপুরে জেলা পিবিআইয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গ্রেপ্তার ভাগ্নিজামাই পলাশ সিটি করপোরেশনের পূবাইলের সাপমারা এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে।
পিবিআই জানায়, গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে পূবাইলে বসুগাঁও এলাকায় আবুল কালাম ও তার স্ত্রী পুতুলকে তাদের বাড়িতে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ব্যাপারে আবুল কালামে বোন হেলেনা বাদী হয়ে মামলা করেন। ঘটনার দুই মাস পর মামলার তদন্তভার পিবিআইয়ে অর্পণ করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. হাফিজুর রহমান নিহত ব্যক্তিদ্বয়ের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও আত্মীয় স্বজনের বিষয় নিয়ে তদন্ত শুরু করেন।
তদন্তকালে এক পর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে (১ অক্টোবর) এ খুনে সরাসরি জড়িত আবুল কালমের আপন ভাগ্নি জামাই পলাশকে পূবাইলের সাপমারা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পিবিআই জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে পলাশ। এছাড়া অন্যান্য আসামিদের নাম ঠিকানাও পকাশ করে আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে সে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. হাফিজুর রহমান জানান, নিহত আবুল কালামের দুই বোন। তাদের মধ্যে একজন মামলার বাদী হেলেনা। অপরজন গ্রেপ্তার পলাশের স্বাশুড়ী সুফিয়া। সুফিয়া দুই মেয়ে রেখে মারা গেছেন প্রায় ১০ বছর আগে। তার স্বামী মানিক অন্যত্র বিয়ে করে সুফিয়ার পৈত্রিক জমিতে বসবাস করেন।
সুফিয়ার জমির অংশটুকু রাস্তার পাশে আর কালামের জমি পেছনের দিকে। তাদের জমির বাটোয়ারা দলিল হয়নি। টাকার প্রয়োজন হওয়ায় কালাম ও হেলেনা রাস্তার পাশের (সুফিয়ার) জমি বিক্রির উদ্যোগ নেয় এবং তাদের পেছনে বাড়ি করে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। এটা তারা মেনে নেয়নি।
পিবিআই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গ্রেপ্তারকৃত পলাশ জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে, তার শাশুড়ির পৈত্রিক সম্পত্তির ওপর নির্মিত ঘর ও জমি তার মামা শ্বশুর আবুল কালাম ও খালা শাশুড়ি হেলেনা অন্যত্র বিক্রির জন্য বায়না করেন। জমি যাতে ক্রয়কারী রেজিস্ট্রি করতে না পারে সে জন্য পলাশ তার সহযোগীদের নিয়ে ওই রাতে ভিকটিম আবুল কালাম ও তার স্ত্রী পুতুলকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে।
দরজা খোলার পর তাদের চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ধারালো চাপাতি দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
COMMENTS