আসাদুল্লাহ মাসুম, কাপাসিয়া: নদীর পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেগে ওঠা চরে শুরু হয়েছে সবজি চাষ। বর্ষা মৌসুমে পুরো চরাঞ্চল পানিতে ডুবে থাকে। শুকনো মৌসুমে সেই চরাঞ্চলের বুকে নামে সবুজের সমারোহ। বর্ষা মৌসুমের রুদ্ররূপ ভুলে যায় চরের বাসিন্দারা। ব্যস্ত হয়ে পড়ে চরের বুকে ফসল ফলানোয়। বর্তমানে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় মাঠে মাঠে নানা ধরনের শীতকালীন ফসলের চাষ হচ্ছে। ক্ষেতে সার দেওয়া, আগাছা পরিষ্কার করা, পানি দেওয়া, ফসলের যতœ নেওয়াসহ নানা কাজে ব্যস্ত এখন চরের কৃষকরা। শীতের শুরুতে পুরাতন ব্র্রহ্মপুত্র ও শীতলক্ষ্যা নদীতে জেগে উঠে চর। এ সময় এলাকার ষাট শতাংশ লোক নদীর জেগে উঠা চর ও দুইপাড়ে বিভিন্ন জাতের সবজির চাষ করে থাকেন। এতে ভাল ফলনও পান তারা। অল্প সময়ে অধিক লাভ হওয়ায় সবজি চাষে এগিয়ে আসছেন এলাকার শিক্ষিত তরুনরাও। উৎপাদিত এ সবজি স্থানীয়ভাবে চাহিদা পূরণের পাশাপাশি পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
সরেজমিনে কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও, সনমানিয়া, উলুসারা, টোকনগর, ইসলামপুর, আড়ালিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলে দেখা গেছে কৃষকের ব্যস্ততা। নদীর দুইপাশে যতদূর দেখা যায় নজরে পরে সবুজের সমারোহ। ভোরের শিশির মুড়িয়ে সবজি ক্ষেতে কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন কৃষক। নদীর পাড়ে চাষ করা হচ্ছে সার ও কীটনাশক বিহীন মুলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, মরিচ, বেগুন, শিম, চিচিঙ্গা, বরবটিসহ নানা ধরনের সবজি।
শীতলক্ষ্যা নদীর চরে তরগাঁও এলাকায় বীজ বপনের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন নাজিম উদ্দিন ও আবুবক্কর। তাদের বাড়ী সাতক্ষীরায়। দৈনিক ৪শ টাকা মজুরিতে স্থানীয় রোকেয়া বেগমের সবজি ক্ষেত প্রস্তুত করছেন তারা। রোকেয়া বেগম জানান, বাড়িতে পুরুষ লোক না থাকায় বাহির থেকে লোক নিতে হয়েছে। উপরের জমি বরাবর নদীর চর দখল করে যার যার মতো সবজি চাষ করা হচ্ছে।
নাজাই গ্রামের কৃষক মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, চরে সবজি চাষে খরচ খুবই কম। সারেরও তেমন প্রয়োজন হয় না। চরে আবাদ করা সবজি খেতেও বেশ সুস্বাদু। স্থানীয় বাজারে এর ব্যপক চাহিদা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান জানান, চলতি বছর কাপাসিয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১১শ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলু, মুলা, বরবটি, বেগুন, শিম, টমেটো, পেঁয়াজ, মরিচ, ধনেপাতা সবজির চাষই বেশি হচ্ছে। তবে চরাঞ্চলের আলাদা কোন হিসাব আমাদের কাছে নেই।

COMMENTS