অপরিকল্পিত প্রকল্প উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে জানিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, অপরিকল্পিতভাবে প্রকল্প নিয়ে অবকাঠামোসহ যেকোনো উন্নয়ন কাজ করলে যেমন তা টেকসই হয় না তেমনি উন্নয়নের সুফল মানুষের নিকট পৌঁছানো যায় না। বরং সুফলের চেয়ে কুফল বয়ে আসে। তাই সকল উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়ার আগে তার ফিজিবিলিটি স্টাডি করে গ্রহণ করতে হবে।
শনিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি ভবনে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহের প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ও জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় মন্ত্রী নিম্নমানের কাজের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, গ্রামীণ, ইউনিয়ন ও উপজেলা রাস্তার ডিজাইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। নেভিগেশন সুযোগ রেখে ব্রিজ নির্মাণ করে নৌ পথগুলো চালু করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি জানান নিম্নমানের কাজের সাথে জড়িত থাকলে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ইট ভাটায় ইট তৈরি করা হচ্ছে কিন্তু সেগুলোর গুণগতমান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে না। যার ফলে এই ইট দিয়ে রাস্তা পাকা করার সময় রাস্তার কাজ টেকসই হচ্ছে না। তাই এ বিষয়টি আমলে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি।
প্রকল্প গ্রহণের পূর্বে ফিজিবিলিটি স্টাডির গুরুত্ব তুলে ধরে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ইনভায়রনমেন্টাল, জিওলজিক্যাল, হাইড্রোলোজিক্যাল, সোস্যাল ইমপ্যাক্ট, ডেমোগ্রাফিক সাইজ এবং ইকোনমিক আউটপুট বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্প নিতে হবে। এসব বিষয়ে স্ট্যাডি না করে প্রকল্প নেয়া যাবে না। নিলে সুফল মিলবে না।
তিনি বলেন, গৃহীত প্রকল্পসমূহ যদি উৎপাদনশীল, ইনকাম জেনারেটিং, টেকসই এবং সময়মত শেষ না হয় তাহলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো অসম্ভব হবে। যে উদ্দেশ্য নিয়ে প্রকল্ নেওয়া হয়, বাস্তবায়ন করার পর দেখা যায় তার সুফল মিলছে না।
এলজিইডির সমস্ত রাস্তা আইডিভুক্ত করার পর নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের রাস্তা আইডিভুক্ত করা নেই। এজন্য এসব প্রতিষ্ঠানের সকল রাস্তা আইডিভুক্ত করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আইডি নাম্বার অনুযায়ী যদি রাস্তার বরাদ্দ প্রদান করা হয় তাহলে সুষ্ঠুভাবে রাস্তা নির্মাণ এবং সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে। এ ক্ষেত্রে এক রাস্তায় দুই প্রতিষ্ঠান অথবা দুইবার তিনবার কাজ করার কোনো সুযোগ থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, শহরের সকল সুযোগ-সুবিধা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে দিতে সরকার আমার গ্রাম আমার শহর দর্শন বাস্তবায়ন করছে। এই দর্শন বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধিসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। আর এই কাজ করলে ২০৪১ সালের আগেই উন্নত-সমৃদ্ধ জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলা গড়ে উঠবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রশীদ খান।
এছাড়া এলজিইডি, ডিপিএইচই, সকল সিটি কর্পোরেশন ও ওয়াসাসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন প্রতিষ্ঠানের প্রধান/প্রতিনিধি এবং চলমান প্রকল্পসমূহের প্রকল্প পরিচালকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
COMMENTS