ডেস্ক: আগামী নির্বাচন ঘিরে ঘর গোছানোর টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ। আগামী ডিসেম্বরে ২২তম জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে দলে নতুন প্রাণসঞ্চারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর আগে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং চলমান জেলা-উপজেলাসহ তৃণমূল সম্মেলনগুলো শেষ করা হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোরও সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব গড়ে তোলা হবে।
এ অবস্থায় আগামীকাল শনিবার ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৫টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে দল গোছানোর এসব পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন।
আগামীকালের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকটি হচ্ছে করোনাকালের দীর্ঘ আড়াই বছর পর দলের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বৈঠক। ২০২০ সালের ৯ মার্চ করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের দু-একটি বৈঠক হয়েছে। করোনা স্বাস্থ্যবিধির কারণে সেগুলোতে নির্দিষ্ট ও কমসংখ্যক নেতার অংশগ্রহণের অনুমতি ছিল। এবারই প্রথম কার্যনির্বাহী সংসদের সব নেতারই বৈঠকে অংশগ্রহণের কথা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল ডিসেম্বরে হওয়ার কথা। ২০১৯ সালের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর ২১তম কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের তিন বছরের মেয়াদ ২০ ডিসেম্বর শেষ হচ্ছে। আগামীকালের বৈঠকে জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। জাতীয় কাউন্সিলের আগেই ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন করা নিয়ে নেতারা কথা বলতে পারেন।
এ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলনের তারিখও এ বৈঠকে চূড়ান্ত করা হতে পারে। এরই মধ্যে মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, তাঁতী লীগ, ছাত্রলীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ এবং বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। জুনের মধ্যেই এসব সংগঠনের সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব গড়ে তোলার কথা আলোচনায় রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি দলীয় ফোরামের একাধিক সভায় জানিয়েছেন, দলের জাতীয় কাউন্সিল ডিসেম্বরেই অনুষ্ঠিত হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলন আয়োজনের তাগিদও দিয়ে রেখেছেন তিনি।
এদিকে, আগামীকালের বৈঠকে জেলা ও উপজেলাসহ তৃণমূল সম্মেলন কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা হবে। এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন বৈঠকে তুলে ধরবেন আটটি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা। ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৩৬টির সম্মেলন শেষ হয়েছে। কয়েকশ উপজেলা ও ইউনিয়ন সম্মেলন শেষে নতুন নেতৃত্বও গড়ে তোলা হয়েছে। ঢাকায় বিভাগ ও জেলা নেতাদের ডেকে এনে এবং ঢাকার বাইরে কোথাও কোথাও বর্ধিত সভা করে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-কোন্দল নিরসনসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদারের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। জাতীয় কাউন্সিলের আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ বাকি ৩২টি জেলাসহ উপজেলা ও তৃণমূল সম্মেলনগুলো শেষ করতে চান দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
এরই মধ্যে বেশ কিছু জেলা-উপজেলা সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী আগামী ১২ মে ফরিদপুর, ১৪ মে মাগুরা, ১৫ মে চুয়াডাঙ্গা, ১৬ মে মেহেরপুর, ১৭ মে ঝিনাইদহ ও ১৯ মে গাজীপুর জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া ১৫ মে ঢাকার দোহার, ১৬ মে নরসিংদীর পলাশ, ২১ মে পাবনার আমিনপুর, ২২ মে সিরাজগঞ্জ সদর, ২৩ মে বেলকুচি, ২৪ মে জয়পুরহাট সদর, ২৫ মে কিশোরগঞ্জ সদর, ২৬ মে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর, ২৮ মে নাটোরের লালপুর, ২৯ মে নাটোরের বাগাতিপাড়া, ৩০ মে নাটোরের গুরুদাসপুর ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, ৩১ মে কিশোরগঞ্জের ইটনা এবং ২ জুন টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। মে ও জুনের মধ্যে পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা ও বরিশাল জেলা এবং সুনামগঞ্জের দিরাই, ধর্মপাশা, জগন্নাথপুর, শান্তিগঞ্জ, হবিগঞ্জ সদর, হবিগঞ্জ পৌরসভা, ছাতক ও দোহারাবাজার উপজেলার সম্মেলন শেষ করা হবে বলেও সংশ্নিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা জানিয়েছেন। সম্মেলন শেষে সংসদীয় আসনভিত্তিক কর্মিসভা, বর্ধিত সভাসহ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ড জোরদার করা হবে বলেও তারা জানান।
এ ছাড়া কালকের বৈঠকে সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি দিবসভিত্তিক কর্মসূচি চূড়ান্ত এবং আর্থসামাজিক চলমান ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হবে। এর বাইরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের চারটি শূন্য পদ পূরণ এবং আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠেয় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এসব বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনাও দেবেন প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক সংবাদমাধ্যম কে বলেছেন, আওয়ামী লীগের প্রতিটি বৈঠকেই রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবারও তাই হবে। তবে প্রতিবারের চেয়ে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। সামনে দলের জাতীয় কাউন্সিল। দলের কয়েকটি সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। বৈঠকে এসব বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

Find us on Facebook
৭ দিনের জনপ্রিয়$type=list-tab$m=0$cate=0$sn=0$rm=0$$va=0
৩০ দিনের জনপ্রিয়$type=list-tab$m=0$cate=0$sn=0$rm=0$$va=0
সর্রাধিক জনপ্রিয়$type=list-tab$m=0$cate=0$sn=0$rm=0$$va=0
সর্বশেষ আপডেট$type=blogging$l=0$c=12$m=0$s=hide$rm=0$va=0$hide=home
দৃষ্টি আকর্ষণ
অপরাধের সূত্রপাত কিংবা ভোগান্তির কথা সরাসরি গাজীপুর অনলাইনে জানাতে ই-মেইল করুন। আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের সংবাদ প্রচার করতে চাইলে
ই-মেইল করুনঃ gazipuronline@gmail.com
গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের সংবাদ প্রচার করতে চাইলে
ই-মেইল করুনঃ gazipuronline@gmail.com
COMMENTS