একটি আদর্শ গ্রামে যা যা থাকে তার সবকিছুই রয়েছে সেখানে। তবে সেই গ্রামে বসবাস করেন না কোন মানুষ। গ্রামটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীপুর ক্যাম্পাসে। যার নামকরণ করা হয়েছে ‘মক ভিলেজ’।
আদর্শ গ্রামের সকল বৈশিষ্ট্যই আছে মক ভিলেজে। মূলত বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদানের সুবিধার্থে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতীকী গ্রাম।
সবুজ-শ্যামল, শান্ত-ছায়াঘেরা, ফসলের মাঠ, টইটুম্বুর জলাধারে নয়নাভিরাম শাপলা পদ্ম, পাখিদের কোলাহল- কয়েক একর জায়গা জুড়ে হৃদয় ভোলানো এ গ্রামে এর সবই আছে।
গ্রামটিতে প্রবেশ করতেই দেখা যাবে কূপ, যা একসময় গ্রামের মানুষের সুপেয় পানির একমাত্র উৎস ছিল। তার সামনে মাটির ঘর, ঘরের মধ্যে কাঠের চৌকির ওপর শীতল পাটি বিছানো। পুরনো আমলের চেয়ার-টেবিল, চাল-ডালের ডালা, কাঠের আলমারি আছে। ঘরের সামনে টানা বড় একটি বারান্দা।
গ্রামটিতে কিছুটা পথ ইট বিছানো বাকিটা মেঠোপথ। ওই পথ ধরে সামনে এগিয়ে দেখতে পাওয়া যায় একটি ছনের ঘর। ছনের ঘরে সুসজ্জিত রয়েছে বাংলাদেশের তাঁতশিল্পের সব জিনিসপত্র। ঘরটির পাশে রয়েছে একটি ঢেঁকি ঘর। গ্রামটির দক্ষিণে পুকুর রয়েছে। ওই পুকুরে কাঠের তৈরি ঘাট তৈরি করা হয়েছে। ছোট্ট পুকুরটিতে ফুটে আছে পদ্মফুল। পুকুরের পাশেই বড় একটি সবুজ মাঠ। কাচারি ঘরের পাশে হাঁস-মুরগি, কবুতরের বাসস্থান। গ্রামের মাঠে ঘুরতে ঘুরতে দেখা যায় আম, লিচু, পেঁপেসহ নানান জাতের ফল ও সবজি।
মক ভিলেজটি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত নয়। তবে শহরে বসবাসরত শিশুদের গ্রামীণ স্মৃতিচিহ্ন সম্পর্কে ধারণা দিতে প্রতি শুক্রবার শিশুদের জন্য খুলে দেওয়া হয় এটি।
বাংলাদেশের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল হাই বাবু বলেন, টেলিভিশন বা অনলাইনে দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে গ্রামীণ পরিবেশের আবহ তুলে ধরতে মক ভিলেজ তৈরি করা হয়েছে। এটি পাঠদান প্রক্রিয়ার সাথে সাথে বেড়ানোরও উপলক্ষ সৃষ্টি করেছে। অতিথিরা যারা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ভিজিট করতে আসেন তারা মক ভিলেজে এসে মুগ্ধ হন।
COMMENTS