স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলটির আসন্ন গাজীপুর মহানগরীর কাউন্সিল ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয়েছে নানান আলোচনা। কেবল আওয়ামী লীগেই নয় দলের বাইরেও মানুষের আগ্রহ অনেক। গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে এবার কে আসছেন সেটিই এই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। আওয়ামী লীগ বরাবরই চেষ্টা করে প্রতিটি কাউন্সিলে দলের সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে নেতা নির্বাচনে নতুনত্ব আনার। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের সভাপতির পরই সাধারণ সম্পাদকের অবস্থান। ফলে এ পদে পরীক্ষিত ত্যাগী নেতাদের ঠাঁই হয়। অতীতের কাউন্সিল গুলো তাই প্রমাণ দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামীলীগের সকল নেতাদের মতো কাউন্সিল’কে ঘিরে গাজীপুরবাসী সেবা করার জন্য ও দলের সকল নির্দেশনা মেনে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ প্রত্যাশা করছেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার (এট-ল) মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কাউন্সিল ঘিরে ব্যারিস্টার (এট-ল) মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেনকে নিয়ে তৃণমূলের নেতা কর্মীদের মাঝেও রয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা। সাজ্জাদ হোসেন সাধারণ মানুষের বিপদে আপদে পাশে থেকে যেই ভাবে সহযোগীতা করে, দলের জন্য বিপদকালীন সময়ে লড়াই সংগ্রাম করে দলকে সুসংগঠিত রেখেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হোসেনের মতো জ্ঞানী ও অভিজ্ঞ নেতা কে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিলে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগ অনেক বেশী সুসংগঠিত হবে বলে মনে করেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। সামনে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল করতে যাচ্ছে দলটি। এদিকে আসছে আগামী ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্যেও প্রস্তুতিও নিচ্ছে ক্ষমতাসীনদের দলটি।
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ কালে তারা বলেন, আমাদের প্রত্যাশা দলকে সার্বক্ষণিক সময় দিতে পারবে, সংকটে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে এগিয়ে নেবে এবং শেখ হাসিনার আস্থাভাজন ও মতমতাদর্শী হয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের চিন্তাচেতনা ফুটিয়ে তুলবেন এমন নেতাদের কথা ভাবতেই চলে আসে ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হোসেনের নাম।
তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ব্যারিস্টার মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বর্তমান গাজীপুর মহানগীর জয়দেবপুর থানাধীন দক্ষিণ সালনা এলাকার একটি মধ্যবৃত্ত, সভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। বাবা মরহুম মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা। পরিবারে চার ভাই বোনের মধ্যে সাজ্জাদ ছিলেন কনিষ্ঠ সন্তান। তার দুই বোন সরকারি স্কুল শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া ভগ্নীপতিরাও স্থানীয় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছে। সাজ্জাদের বড় ভাই একটি সরকারি কলেজে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হোসেন বর্তমানে সুপ্রীম কোর্ট এর আইনজীবী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া তার স্ত্রী ফওজিয়া আক্তার পপি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে তিনি সুপ্রীম কোর্ট এর একজন আইনজীবী। পারিবারিক জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক (ছেলে-মেহুল সাজ্জাদ ও মেয়ে-ওরেলিয়া সাজ্জাদ।
রাজনৈতিক অঙ্গনে কথা বলে জানা যায়, ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হোসেন ১৯৮৬-১৯৮৯ সালে প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কাউলতিয়া ইউনিয়ন শাখা, জয়দেবপুর, গাজীপুর, ১৯৮৭-১৯৮৯ সালে সক্রিয় সদস্য, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা কলেজ শাখা, ১৯৮৮-১৯৯১ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জয়দেবপুর শাখা ১৯৯১-১৯৯৪ সালে সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কবি জসিম উদ্দিন হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এবং সদস্য, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতীয় কমিটি (মইনুদ্দিন হাসান চৌধুরী ও মোঃ ইকবালুর রহিম কমিটি), ১৯৯-১৯৯৮ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, ১৯৯৮-২০০০ সালে সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য, (মোঃ বাহাদুর ব্যাপারী ও বাবু অজয়কর খোকন কমিটি), ২০০০-২০১০ সালে সক্রিয় সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ইউ কে।, ২০১০-২০১২ সালে সক্রিয় সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ২০১৩ সালে সহ-সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ কমিটি, ২০১৩ সালে কার্যনির্বাহী সদস্য, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সুপ্রিম কোর্ট শাখা, ২০১৬ সালে সদস্য, কার্যনির্বাহী কমিটি গাজীপুর মহানগর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সম্মেলন কমিটির সদস্য হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হোসেন আমেরিকান ইন্টারন্যশনাল ইউনিভার্সিটি, এডিশন গ্রুপ, এন্টি-করাপশন কমিশন (দুদক), সাউথ এশিয়া ইউনিভার্সিটি, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসান এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোঃ লিঃ , পেট্রো বাংলা (বাংলাদেশ অয়েল গ্যাস এন্ড মিনারেল কর্পোরেশন, বাংলাদেশ ওয়াটার ডেভোলোপমেন্ট বোর্ডে আইন পরামর্শক ও প্যানেল আইনজীবী হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ১৩ মাস বাকি। তাই ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের এবারের জাতীয় সম্মেলনের গুরুত্ব অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি। তাই আওয়ামী লীগকে সাধারণ সম্পাদক বাছাইয়ে অনেক কৌশলী হতে হবে।
ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে লালন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন পূরণে দলের নির্দেশনা মেনে আমৃত্যু কাজ করে যেতে চাই। মানুষের সেবার বিনিময়ে কিছুই চাই না। অন্যায়ের সাথে কখনো আপোষ করিনি। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগকে এবার নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এসব চ্যালেঞ্জে উত্তীর্ণ হওয়ার বিকল্প নেই তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একজন সৈনিক হয়ে দলের জন্য কাজ করতে চাই। আসন্ন কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদে সকলের দোয়া ও সমর্থন প্রত্যাশা করছি। আমি চাই সিনিয়র নেতারা যাকেই গাজীপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক করুক তিনি যেন অহঙ্কারী না হয়, নেতাকর্মীরা সহজেই যেন তাকে পায়, তিনি যেন মাইম্যান সৃষ্টি না করে দলের জন্য নিবেদিতদের সবসময় মূল্যায়ন করেন। দলের জন্য কাজ করে সংগঠনকে শক্তিশালী করে এগিয়ে নেন। সৎ পথে থাকেন চাঁদাবাজি ও ঝুট বাণিজ্যসহ কালো পথ থেকে দূরে থেকে দলের সকল নির্দেশনা মেনে চলেন।
দলীয় সূত্র বলছে, যেসব নেতাকর্মীরা দলের মধ্যে থেকে‘পারফর্মেন্স দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন’ এবং বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে দলের সুনাম নষ্ট করেছে কাউন্সিলে তাদের কপাল পুড়তে পারে। এছাড়া বেশ কয়েকজন সাবেক নেতা এবার নতুন করে কমিটিতে জায়গা পেতে পারেন।
COMMENTS